আর্যদের ধর্মীয় বিশ্বাস
আর্যদের ধর্মীয় বিশ্বাস
আর্যদের যে পরিচয় পাওয়া যায় তা হতে পরিষ্কার হয় যে আর্যদের ধর্মীয় বিশ্বাস ছিল সহজ ও সরল।আর্যগণ প্রকৃতির রূপ দেখে ও বিস্মিত হয়েছেন, দেবতার কল্পনা করেছেন। তাদের উপাস্য দেবতা ছিলো আলোর দেবতা সূর্য, আকাশের দেবতা দ্যৌঃ, বায়ুর দেবতা মরুৎ, জলের দেবতা বরুণ, বৃষ্টি ও বজ্রের দেবতা ইন্দ্র। ইন্দ্র ও বরুণ ছিলেন দেবতাগণের মধ্যে প্রধান। উষা, সরস্বতী, পৃথিবী প্রমুখ দেবীর উল্লেখও ঋগ্বেদে আছে। আর্যরা ছিলেন মূলতঃ প্রকৃতির উপাসক। আর্যরা মনে করতেন সকল দেবতাই এক অদ্বিতীয় মহাশক্তির বিভিন্ন রূপ। উপনিষদে এই এক ব্রহ্ম চিন্তারই প্রধান্য ঘটেছে। আর্যগণ অগ্নিকুণ্ড প্রজ্বলিত করে দুগ্ধ,ঘৃত প্রভৃতি প্রিয় আহার্য উপাস্য দেবতাকে নিবেদন করার প্রাক্কালে বৈদিক মন্ত্রও পাঠ করতেন। বেদের ব্রাহ্মণ অংশ যখন রচিত হয় তখন যজ্ঞ ক্রিয়ার নানা জটিলতা দেখা দেয় এবং বৈদিক মন্ত্রাদিতে জ্ঞান সম্পন্ন এক শ্রেণীর লোকের উদ্ভব হয়। এই শ্রেণীর পুরোহিত, যাদের প্রাধান্যে বৈদিক ধর্মের আন্তরিকতার লুপ্ত হয়ে যাগ যজ্ঞের ক্রিয়াকলাপই মূখ্য হয়ে দেখা দেয়।
বেদ সত্য ও প্রকৃত জ্ঞানের ভান্ডার। ইহা শাশ্বত, ইহার সৃষ্টি নাই এবং শুরু নাই। বেদ দুইভাগে বিভক্ত, যথা মন্ত্র বা সংহিতা এবং ব্রাহ্মণ। মন্ত্রসমূহ আবৃতি করা হয় যার সাথে সংহিতা যুক্ত হয়েছে। ব্রাহ্মণ আচার-অনুষ্ঠান আরাধনা ও উৎসর্গ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছে। ব্রাহ্মণ আবার তিন ভাবে বিভক্ত যথা: ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও পরিষদ। বেদে বহু দেবতার বর্ণনা আছে। ঈশ্বরকে বহু নামে আরাধনা করা হয় এবং বিভিন্ন গুন, শক্তি ও কার্যকারিতা সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। জীবন ও জগত সম্পর্কে বেদের বর্ণনা অপূর্ব সুন্দর। ঈশ্বরের কৃপায় মানুষ পৃথিবীতে দীর্ঘ আনন্দঘন দিন যাপন করে। প্রার্থনা ও যাগযজ্ঞ সবই ধনরত্ন, সন্তান-সন্ততি ও বিভিন্ন সম্পদের জন্যে ঈশ্বরের কাছে নিবেদিত। ঈশ্বরের কৃপায়ই এই সুন্দর পৃথিবীতে কেহ প্রাচুর্য, জাঁকজমক ও আনন্দে বসবাস করে। মৃত্যুর পর মানুষ অন্য পৃথিবীতে গমন করে, যেখানে আরও অধিক সুখ আছে, যেখানে পূর্বপুরুষগণ বসবাস করেন যার নাম 'প্রীতিলোক'। দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে গঠিত কর্মের দ্বারা পরবর্তী জীবনের পরিণতি নির্ধারণ করা হয়। বেদ পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে।
বেদের পরেই আর্যদের অপূর্ব সৃষ্টি উপনিষদ। ইহা বেদের জ্ঞানকাণ্ড। উপনিষদ ও ষড়দর্শন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আমরা জানি উপনিষসমূহ বেদের আধ্যাত্মিক জ্ঞান সৃষ্টির দর্শন সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছে। উপনিষদের দর্শন অনুসারে:
(ক) ঈশ্বর শূন্যতা থেকেই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি করেছেন।
(খ) অনন্ত কাল থেকে পদার্থের অস্তিত্ব ছিল, যা ঈশ্বর হতে স্বতন্ত্র।
(গ) ঈশ্বর ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ড অভিন্ন
(ঘ) ঈশ্বরই একমাত্র সত্য
ধর্মীয় পোষ্ট পেতে
হিন্দু ধর্মের শাস্ত্র পরিচয়
পেইজে লাইক দিন।
আমাদের ফেসবুক পেইজ----
মন্তব্যসমূহ
সম্পূর্ণ তথ্য দেখতে ক্লিক করুন। ওঁ নমো ভাগবতে বাসুদেবায়🙏।।