হিন্দুদের দৈনিক প্রার্থনার মন্ত্র
দৈনিক প্রার্থনা
হিন্দুদের অবশ্য কর্তব্য
মন্ত্র
সব হিন্দুর কর্তব্য দিনে অন্তত দুই বার নিম্নলিখিত মন্ত্রগুলাে আবৃত্তি করা । দশ বছরের বেশি বয়সের সব পুরুষ , নারীকে এই মন্ত্রগুলাে আবৃত্তি করতে হবে । বৈদিক সুরে ও ছন্দে উচ্চারিত হলে মন্ত্রগুলাে আবৃত্তিকারকে এক অভূতপূর্ব স্বাস্থ্য , অর্থ , বিষয় সম্পত্তি , শক্তি ও শান্তি দান করে । সর্ব প্রচেষ্টায় আবৃত্তিকার সাফল্য ও সুস্থ জীবন লাভ করেন । যে কোনাে স্থানে , যে কোনাে সময় আবৃত্তি করা । যায় , তবে শ্রেষ্ঠ ফলের জন্য প্রত্যুষে এবং সায়ংকালে মন্দিরে অথবা উদ্যানে অন্যদের সঙ্গে সম্মিলিত কণ্ঠে আবৃত্তি করা উচিত । অনেক হাজার বছর ধরে এই সব মন্ত্র শক্তিশালী বলে প্রমাণিত হয়েছে । সুর সংযােগে আবৃত্তি অলৌকিক কম্পনের সৃষ্টি করে , তার ফলে আবৃত্তিকারের চতুর্দিকে এক অদৃশ্য সুরক্ষা আবরণের সৃষ্টি হয় । আধুনিক বিজ্ঞান এখনও এই সব মন্ত্রশক্তির কারণ ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়নি , কিন্তু শক্তি উপলব্ধি করতে পেরেছে । যে কোনাে ব্যক্তি ( তিনি হিন্দু না হলেও ) এই সব মন্ত্র আবৃত্তি করতে পারেন ও তার দ্বারা উপকৃত হতে পারেন :
ওঁ শ্রী বিষ্ণুঃ ওঁ শ্রী বিষ্ণুঃ ওঁ শ্রী বিষ্ণুঃ
ওঁ ভূভুবঃ স্বঃ তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি
ধিয়াে য ন প্রচোদয়াৎ ।
ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ম মহাদ্যুতিম্ ।
ধ্যান্তরিং সর্বপাপঘনং প্রণতােস্মি দিবাকরম্ ।
ওঁ বক্রতুন্ড মহাকায় সূর্যকোটিসমপ্রত
নির্বিঘ্নাং কুরু মে দেব সর্বকার্যেষ্ণু সর্বদা
ওঁ নমাে গণপতয়ে । ওঁ নমাে গণপতয়ে ।
ওঁ বন্দে সর্বভূতে বিরাজমানম্ ঈশ্বরম্ একমেবাদ্বিতীয়ম্
প্রণমামি দেবরূপেণ তান্ সর্বান্ ঈশ্বরপ্রেরিত দূতান্
ঈশ্বর - প্রেরিতা দূতা আগচ্ছন্তি দেবরূপেণ পুনঃ পুনঃ
তন্মধ্যে শ্রেষ্ঠত্রয়ং ব্রহ্মবিষ্ণুমহেশ্বরাঃ ।
ওঁ নমাে ব্রহ্মণ্য দেবায় গাে ব্রাহ্মণ হিতায় চ
জগদ্ধিতায় শ্রীকৃষ্ণায় গােবিন্দায় নমাে নমঃ ।
ওঁ কৃষ্ণায় বাসুদেবায় হরয়ে পরমাত্মনে
প্রণত ক্লেশনাশায় গােবিন্দায় নমাে নমঃ ।
ওঁ নাগেন্দ্রহারায় ত্রিলােচনায় ভস্মাঙ্গরাগায় মহেশ্বরায়
নিত্যায় শুদ্ধায় দিগম্বরায় তস্মৈ নকারায় নমঃ শিবায় ।
ওঁ মন্দাকিনী সলিল - চন্দনচর্চিতায়
নন্দীশ্বর - প্রমথনাথ - মহেশ্বরায় ।
মন্দারপুষ্প - বহুপুষ্প সুপুজিতায় তস্মৈ মকারায় নমঃ শিবায় ।
ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হে তবে
নিবেদয়ানি চাত্মানং ত্বং গতিঃ পরমেশ্বরঃ ।
ওঁ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবিদর্দ্ধনম্
উর্বারুকমিব বন্ধনান্ মৃত্যোর্মুক্ষীয় মামৃতাৎ ।
ওঁ সর্বমঙ্গলমঙ্গল্যে , শিবে সর্বার্থলাপিকে
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমােহন্তু তে ।
ওঁ ত্রিমস্তকানাং জ্ঞানম্ একশিরে অবস্থিতং
চতুর্বাহুল্যবলং দ্বিহস্তে ব্রোপিতম্ ।
ভক্তেচ্ছাপূরণার্থং পুনঃ পুনঃ আবির্ভূতম্
প্রণমামি তং হি ঈশ্বরপ্রেরিতদৃতম্ ।
ওঁ য আস্তিকো ধর্মনিষ্ঠঃ স বৈ শূরাে ন নাস্তিকঃ
নাস্তিকঃ কাপুরুষােঅভূৎ পৃথিব্যাৎ পরিধাবতি ।
একাশং স্বােপার্জনেস্য দেয়ম্ দীনজনায় ।
যে ভূঞ্জীত - স্বয়মেব , স মােঘং কেবলদী চ ।
ওঁ ঈশা ব্যসমিদং সর্বং যৎ কিঞ্চ জগত্যাং জগৎ
তেন ত্যক্রেন ভুঞ্জীথা মা গৃধঃ কস্যষিদ্ধনম্ ।
ওঁ তুমব মাতা চ পিতা ত্বমেব , ত্বমেব বন্ধু সখা ত্বমেব
তুমেৰ বিদ্যা দ্রবিণং ত্বমেব , ত্বমেব সর্ব মম দেবদেব ।
দশ বছরের অধিক বয়স্ক প্রত্যেক হিন্দুর ধর্ম রক্ষার্থে কি কর্তব্য রয়েছে । যেমন ( ১ ) সকালে একবার এবং রাত্রে একর অন্তত পাঁচ মিনিট করে সময় ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পনেরটি মন্ত্র এক এক করে পাঠ করতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে মন্ত্রের অর্থ উপলব্ধি করতে । ( ২ ) দিনে অন্তত একবার দশ মিনিট প্রাণায়াম করতে হবে ( ৩ ) মাসে একবার আত্মীয় , বন্ধু , পাড়া - পড়শীদের নিয়ে নিজের সাধ্যমত ভােজ উৎসব ' আয়ােজন করতে হবে অথবা অন্যের আয়ােজিত ‘ ভােজ উৎসবে যােগদান করতে হবে ।
প্রাণায়াম অত্যন্ত সহজ । শিরদারা সােজা রেখে মাটিতে পদ্মাসন ভঙ্গিতে বসে বা চেয়ারে পা ঝুলিয়ে বসে বুড়াে আঙ্গুল দিয়ে ডান নাসারন্ধ্র বন্ধ করে বাম নাসারন্ধ্র দিয়ে শ্বাস টানতে হবে , এবার তর্জনী দিয়ে বাম নাসারন্ধ্র বন্ধ করে ডান নাসারন্ধ্র দিয়ে পুরােপুরি ঘাস ছাড়তে হবে । আবার ডান নাসারন্ধ্র দিয়ে পুরাে শ্বাস টানতে হবে এবং এবার বুড়াে আঙ্গুল দিয়ে ডান নাসারন্ধ্র বন্ধ করে বাম নাসারন্ধ্র দিয়ে পুরাে শ্বাস ছাড়তে হবে এবং বাম নাসারন্ধ্র দিয়ে আবার পুরাে শ্বাস টেনে , তর্জনী দিয়ে বাম নাসারন্ধ্র বন্ধ করে , ডান নাসারন্ধ্র দিয়ে খাস পুরাে ছাড়তে হবে এবং তারপর ডান নাসারন্ধ্র দিয়ে আবার পুরাে শ্বাস টানতে হবে । শ্বাস টেনে বুড়াে আঙ্গুল দিয়ে ডান নাশারন্ধ্য বন্ধ করে , বাম নাশার দিয়ে পুরাে খাস ছেড়ে আবার সেই নাশার দিয়ে পুরাে শ্বাস টানতে হবে এবং ওটাকে বাম নাশার বন্ধ করে ডান নাশার দিয়ে ছাড়তে হবে । ভরা পেটে প্রাণায়াম করা উচিৎ নয় । প্রয়ােজনে যােগ্য ব্যক্তির থেকে শিখে নেওয়া যেতে পারে ।
যারা হিন্দুধর্ম পালন করবেন তারা এবং তাদের নিকট আত্মীয়রা সুস্থ , সুখী , সমৃদ্ধ এবং আনন্দময় জীবন কাটাবেন ।
মনে রাখতে হবে সামান্য বিদ্যা অর্জনের মাধ্যমে ঈশ্বরের ইচ্ছার বিচার করার চেষ্টা বড় নির্বুদ্ধিতা ।
কোন মানুষকে উচ্চ , নিচ ভেদাভেদ করা , অন্যের ক্ষতি করে । স্বীয় স্বার্থসাধন করা , জীবনে তালসতা এবং ভীরুতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হিন্দুর পক্ষে পাপ ।
এখানে যে পনেরটি মন্ত্র দেওয়া হয়েছে তা বীজ মন্ত্র এবং সংসারে সুখ এবং জীবনঅন্তে স্বর্গ প্রাপ্তির পক্ষে যথেষ্ট । কিন্তু নানা উৎসবে যেমন বিবাহ অনুপ্রাশন , কোন দেব দেবতার পূজা ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই মন্ত্রর অতিরিক্ত প্রাসঙ্গিক মন্ত্রসমূহ পাঠ করা যেতে পারে ।
কোন পূজায় অথবা উৎসবে এই পনেরটি মন্ত্রই ভক্তিভরে । সকলে মিলে পাঠ করা প্রয়ােজন । আমাদের লােকাচারে উপকরণের ব্যবহার কখনাে নিজ ঐশ্বৰ্য্য প্রদর্শনের জন্য করা হয় , কখনাে বা ভক্তের উপর , নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য , পুরােহিতরা আর্থিক বােঝা চাপান । ইহা প্রয়ােজন অতিরিক্ত । উপাচার ঈশ্বর গ্রহণ করেন না ।
___________________🙏🙏🙏_____________________
ধর্মীয় পোষ্ট পেতে
হিন্দু ধর্মের শাস্ত্র পরিচয়
পেইজে লাইক দিন
https://www.facebook.com/hindushastra/
মন্তব্যসমূহ
Learn To Get Google Adsense Approved . বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন