ভগবান তার ভক্তের সেবা করেন

ভগবান তার ভক্তের সেবা করেন

ঈশ্বর আরাধনার বিভিন্ন পদ্ধতিকে জ্ঞান, কর্ম ও ভক্তি এই তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। এ সাধন পদ্ধতির মধ্যে ভক্তিই হচ্ছে আরাধনার শ্রেষ্ঠ পথ। পূজনীয় ব্যক্তি বা ঈশ্বরের প্রতি অনুরাগকে ভক্তি বলা হয়। ভক্তির যিনি অধিকারী, তিনিই ভক্ত। ভক্তির বিভিন্ন প্রকার আছে, যেমন- পিতৃভক্তি, মাতৃভক্তি, গুরুভক্তি ও ভগবদ্ভক্তি। ভক্তির আশ্রয় হচ্ছে ভক্ত হৃদয়। অসাধারণ শক্তি রয়েছে ভক্তির মধ্যে। ভক্তকে টেনে তোলে ভগবানর দিকে, ভগবানকে নিয়ে আসে ভক্তের সান্নিধ্যে। ভগবান তার ভক্তের সেবা করেন। ভক্ত যখন শ্রদ্ধা ও ভক্তিতে ভগবানের নিকট আত্মনিবেদন করে, ভগবানও তখন সে ভক্তের সেবায় তৎপর হন। একটি দৃষ্টিন্তস্বরূপ উল্লেখ করা যায় :-

অর্জুন মিশ্র নামের একজন পণ্ডিত ভক্ত ছিল। তিনি গীতার টীকা রচনা করেছিলেন। নবম অধ্যায়ের ২২ তম শ্লোকে ভগবান বলছেন, অন্য কোন বিষয় চিন্তা না করে যারা আমার উপাসনা করেন, সে সব ভক্তের যোগ ও ক্ষেম আমি বহন করি। এই শ্লোকে "বহাম্যহং" অর্থাৎ আমি বহন করি" এই শব্দটি পড়ে পণ্ডিত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। ভগবান ভক্তের যোগ ও ক্ষেম অর্থাৎ অপ্রাপ্ত ও প্রাপ্ত বস্তুর প্রাপ্তি ও প্রাপ্ত বস্তুর সংরক্ষণ এ সব করার দায়িত্ব বহন করেন, কথাটি তাঁর কাছে অসম্ভব বলে মনে হয়েছে। তাই বেশ চিন্তা করে ইহা ভুল ভেবে তিনি শব্দটি কেটে লিখে দিলেন, "দদাম্যহং" অর্থ "আমি দিয়ে থাকি।"
অর্জুন মিশ্র দরিদ্র ব্রাহ্মণ পণ্ডিত। দারিদ্র ও পণ্ডিত্য দুইই  ব্রাহ্মণের ভূষণ। দরিদ্র ব্রাহ্মণের পোষ্য ছিল ৫-৬ জন। মিশ্র মশায় ভিক্ষায় বেরিয়েছেন। কোন ভিক্ষা পাননি। তিনি ক্লান্ত দেহে এক বৃক্ষ তলে বসে পড়লেন। চোখের সামনে ভেসে উঠলো অভুক্ত পরিবার-পরিজনের প্রতিচ্ছবি। সর্বান্তকরণে শ্রীহরিকে স্মরণ করে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম হতে জেগে দেখেন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। শূন্য ভিক্ষাপাত্র নিয়ে ভক্ত অর্জুন মিশ্র বাড়ি ফিরলেন। দেখলেন, পতিব্রতা স্ত্রী দুয়ারে অপেক্ষমান। স্বামীকে দেখে বললেন, "এত দেরী করলে কেন, অনেকক্ষণ ঠাকুরের ভোগ দিয়ে অপেক্ষা করছি। নিঃস্ব স্বামীর প্রতি বিদ্রূপ ভেবে অর্জুন মিশ্র বললেন। "কি আর ভোগ দেবে, শ্রীহরি আজ আমার ভাগ্যে কিছুই জুটিয়ে দেননি। "পণ্ডিড গৃহিণী অবাক হয়ে বললেন, "তুমি বলছ কি? তুমি এতো খাবার পাঠালে আর বলছ কিছুই জুটেনি। দু,জন সুন্দর ছেলেকে তুমি বেত্রাঘাত করে পাঠিয়ে দিলে অথচ এখন নাকি বলছ তুমি?"
অর্জুন মিশ্র হতবাক হলেন। ঘটনাটি জানতে চাইলেন। গৃহিণী বললেন, "ছেলে দুটি বললো তাদের বাড়ি গোয়াল পাড়ায়, তারা বনে বনে গরু চরায়। একজনের গায়ের রং ফর্সা, আর একজনের কালো। দুইজনই দেখতে অতি মনোহর প্রাণ জুড়িয়ে যায়। তুমি কি নিষ্ঠরভাবে তাদের পিঠে বেত্রাঘাত করলে।"
সব কথা শুনে পণ্ডিত মশায় মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন । অশ্রুধারায় তাঁর বুক ভেসে গেল। গৃহিণীকে বললেন, তুমি "শ্রীকৃষ্ণ ও বলরাম" কে দেখতে পেয়েছ, তুমি ভাগ্যবতী, ধন্য তোমার জীবন। আমি হতভাগ্য, অপরাধী, আমি "বহাম্যহং" শব্দটি কেটে "দদাম্যহং" করেছি। তাই তাদের পিঠে রক্ত ঝরছে।"
ভগবান ভক্ত বৎসল। তিনি ভক্তের জন্য সবই করতে পারেন। ভক্তের বোঝা  ভগবান বয় -একথা নিতান্তই সত্য। ভক্তিভাবে ভগবানের সাধনা করলে তিনি আর ভক্তকে সকল প্রকার সাহায্য করেন। ভক্তিই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ সাধনা ও উন্নতির প্রধান সোপান।

মন্তব্যসমূহ

udellaabegglen বলেছেন…
Casino Delivers Red Dog Resort With Cash To New Frontier
and a new live poker room located in 오산 출장샵 the new 부산광역 출장안마 resort. By Hilton Green Bay. September 4, 안동 출장샵 2021 양주 출장샵 in Bayou at the Hard Rock Hotel & Casino. 울산광역 출장샵

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিষ্ণু দশ অবতারের পরিচয়

বেদের চনৎকার কিছু শ্লোক।

হিন্দুদের দৈনিক প্রার্থনার মন্ত্র