সংস্কৃত নাম/শব্দের অর্থ

সংস্কৃত নাম/শব্দের অর্থ

অবতারবাদ - হিন্দুরা বিশ্বাস করে পুনজন্মে, অর্থাৎ বিশ্বাস করে যে একজন পূর্বজন্মের কিছু কিছু গুণাবলি নিয়ে আবার জন্মগ্রহণ করে। হিন্দুধর্মের তিন প্রধান দেবতা ছিলেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বর। মহালক্ষ্মী ছিলেন বিষ্ণুর স্ত্রী, মহেশ্বরের স্ত্রী ছিলেন ভগবতী এবং পুত্রেরা ছিলেন কার্তিকেয় এবং গণেশ। বারে বারে মহৎ মানুষেরা হিন্দূ সমাজে দেবতারূপে এসেছেন এবং তাঁদের অধিকাংশকে পূর্বে কোনো দেবতা অথবা তাঁর পত্নীর অবতার বলে গণ্য করা হয়। যেমন ভগবান রাম, ভগবান কৃষ্ণ, ভগবন বেঙ্কটেশ্বর, ভগবান বালাজিকে বিষ্ণুর অবতার মনে করা হয়। ভগবান শিব, ভগবান নটরাজ, ভগবান সুব্রাহ্মমণিয়মকে  মহেশ্বরের অবতার বলা হয়। দুর্গা ও কালীকে ভগবতীর অবতার মনে করা হয়।

ব্রহ্ম - ঈশ্বরের অনেক নামের একটি।

ব্রহ্মা - সনাতন ধর্মের প্রথম তিন প্রবক্তাদের একজনের নাম। তিনি মধ্য ভারতীয়।

বিষ্ণু - সনাতন ধর্মের প্রথম তিন প্রবক্তাদের একজনের নাম। তিনি দক্ষিণ ভারতীয় ছিলেন। তিনি নারায়ণ অথবা ভগবান বেঙ্কটেশ্বর নামেও খ্যাত।

বিষ্ণুঁ - ঈশ্বরের অনেক নামের একটি, বিষ্ণু শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত মূল 'বিস' থেকে, যার অর্থ ব্যাপ্ত হওয়া। বিষ্ণুঁ সর্বব্যাপী। দুই নামের সমতার জন্য কিছু ভ্রম হয়। বিষ্ণু মানুষ ছিলেন। বিষ্ণুঁ ঈশ্বরের অপর নাম।

দেবতা - দেবতারা ত্রাণকর্তা অথবা দেবদূত। দেবতারা মূলত ঈশ্বর প্রেরিত মানুষ। দেবতারা ত্রাণকর্তা পথ প্রদর্শক ইত্যাদির কাজ করেন। তাঁদেরকে লোকে শ্রদ্ধা করে ভালোবাসে। যেহেতু তাঁরা মানুষ ছিলেন, তাদের সকলের মানুষের মতো কিছু কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। তাদের সকলের উপরেই তখনকার সামাজিক সম্পর্ক, ভৌগলিক, ঐতিহাসিক এবং তাঁদের সময়কাল জীবনকালের প্রভাব সবসময় পড়েছিল। অতএব তাঁদের অনেক কাজ কর্ম নিয়ে আমাদের আধুনিক মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। তবে তাঁরা আমাদের প্রণম্য। সভ্যতার অগ্রগতিতে তাঁদের অবদান অনেক। তাদের সুকর্ম এবং সৎ পথ প্রদর্শনের ফল আমরা এখন প্রত্যেক দিন ভোগ করছি।

মহেশ্বর - সনাতন ধর্মের প্রথম প্রবক্তাদের অন্যতম। তিনি কাশ্মীরের অধিবাসী ছিলেন। তাঁর আরও অনেক নাম আছে, যথা, শিব, রুদ্র, নটরাজ, ভগবান সুব্রাহ্মণ্যম প্রভৃতি।

ব্রহ্মচর্য - আত্মসংযম, কামপ্রবৃত্তির সংযম করা হয় প্রধানত কোনো মহৎ উদ্দেশ্যে মনের একাগ্রতার অবলম্বন করার জন্য।

বেদ - সনাতন ধর্মের আদি শাস্ত্র, সৎ এবং সাফল্যময় জীবন যাপনের পথ নির্দেশ করে। বেদ ঈশ্বর আদি দেবতাদের মাধ্যমে মানব জাতিকে দান করেছেন।

গীতা - যে কোন ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবন পালনের জন্যে ভগবান কৃষ্ণের উপদেশাবলি।

ধর্ম - নৈতিক মূল্যবোধ, প্রাত্যহিক জীবনে সাফল্য লাভ এবং আনন্দময় জীবন অনুসরণের জন্য পথকে বলা হয় ধর্ম। ধর্ম শিক্ষা দেয় যে মানব সমাজের সর্বময় মঙ্গল এবং নিজ মঙ্গল কিভাবে পালন করতে হবে এবং এই দুই সত্ত্বা একে অপরের পরিপূরক। 

সনাতন ধর্ম - মানবসভ্যতার প্রাচীনতম ধর্ম। পরবর্তীকালে তার নাম হয় হিন্দুধর্ম।

ভজন - ঈশ্বরের গুণগানের সুমধর সঙ্গীত।

ভোজ উৎসব - পূর্ণিমার দিন সারাদিন উপবাসের পর সন্ধ্যায় পূর্ণিমার আলোকে ধর্মীয় সামাজিক ভোজ, পালাক্রমে আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্খী ও বন্ধুরা মাসে একবার সন্ধ্যায় সকলে মিলে রাত্রের খাওয়ার আয়োজন করেন।

শুদ্র - কুশলী কারিগর, জীবিকা অর্জনের যিনি দৈহিক শ্রম করেন।

ব্রাহ্মণ - যিনি শিক্ষকতার দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রাচীনকালে ব্রাহ্মণেরাই জ্ঞানের উৎস ছিলেন এবং বেদের প্রচার করতেন।

রাক্ষস - পৈশাচিক ব্যক্তি যে অন্য সকলের ক্ষতি করে জীবন ধারণ করে।

অসুর - যে ব্যক্তি সমাজের মঙ্গলাকাঙ্খী নয়, স্বার্থপর এবং পৈশাচিক প্রকৃতির।

বৈশ্য - উদ্যোগী, যিনি ব্যবসার দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করেন।

ক্ষত্রিয় - সামরিক বিদ্যায় শিক্ষিত যে ব্যক্তি জাতির অথবা কোনো সংগঠনের নিরাপত্তা বিধানের দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করেন।

দলিত - যে ব্যক্তিকে কোনও বিশেষ বৃত্তি শিক্ষার সুযোগ সমাজ করে দেয়নি এবং সে কারণে যে অদক্ষশ্রমিক হিসেবে জীবিকা অর্জন করতে বাধ্য হয় তিনিই দলিত হিসেবে সমাজে পরিচিত।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিষ্ণু দশ অবতারের পরিচয়

বেদের চনৎকার কিছু শ্লোক।

হিন্দুদের দৈনিক প্রার্থনার মন্ত্র