পোস্টগুলি

আমাদের পোস্ট

ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস

ছবি
ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস   “ ঈশ্বর সকলের প্রভু , সর্বজ্ঞ , নিয়ন্ত্রক , বিশ্বের কারণ , স্রষ্টা এবং ধ্বংসকারী  -উপনিষদ  ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয় , তিনি সম্পূর্ণ , যা হতে সকল কিছুর সৃষ্টি এবং যাতে সকলের প্রত্যাবর্তন , তিনিই ঈশ্বর । এই সম্পূর্ণ একককে বহুনামে ভূষিত করা হয়েছে বিভিন্নভাবে । সনাতন ধর্মাবলম্বীগণ একে বলেন ব্রহ্ম । এই ব্রহ্মই হচ্ছে সকল কিছুর মূল এবং কারণ । তিনিই পুরুষােত্তম , অবিনশ্বর ও অনন্ত । সকল বস্তুতে তিনি বিরাজমান , সকল কিছুই তাকে ছাড়া অস্তিত্বহীন । তিনি বিশ্বনিয়ন্ত্র , সর্বব্যাপী , সর্বশক্তিমান ও মহিমাময় ।  পরম কারণবাদের যৌক্তিকতা থেকে বিচার করলে দেখা যায় যে পরমেশ্বর এক মহাকৌশলী । তিনি যে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডকে সৃষ্টি করেছেন তারও কারণ আছে । এই বিশ্ব ব্রহ্মাও এক শৃঙ্খলার মাধ্যমে পরিচালিত । লক্ষ কোটি গ্রহ উপগ্রহ মহাকাশে নির্দিষ্ট গতিপথে আবর্তিত হচ্ছে , জীবন্ত প্রাণীর বৈচিত্র্যের মাঝে শৃখলা আছে । এই কেন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রক একজন অপরিসীম ক্ষমতাবান পরমপুরুষ , অসংখ্য মস্তক , অনন্ত চক্ষু , অগণিত চরণ , তিনি সমগ্র বিশ্বে - সর্ব জীবে পরিব্যাপ্ত ।  এ বিশ্বে যা কিছু ঘটে তার একটি কারণ

হিন্দুধর্মীয় রীতি ও আচার অনুষ্ঠান

ছবি
সংস্কার :  প্রতিটি ধর্মই তার অনুসারীদের জন্যে কিছু রীতি - নীতি , আচার - অনুষ্ঠান । প্রতিপালনের উপদেশ বা নির্দেশ দিয়ে থাকে । এ সকল অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ;  ( ১ ) কোন জীবকে জয়লাভে সাহায্য করা ।  ( ২ ) জীবের সাহায্যে উচ্চ প্রজ্ঞাকে আমন্ত্রণ করা যেমন , মুনি ঋষিদের সাহায্য কামনা করা ।  ( ৩ ) পারিপার্শ্বিক অবস্থার উন্নতি সাধন করা ।  এই লক্ষ্য অর্জনে নানা প্রকার বস্তু , ক্রিয়াকলাপ , চালচলন ও শব্দকে এমনভাবে বিন্যাস করা হয়েছে যেন ফল লাভ সহজ ও দ্রুত হয় । সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে গর্ভ অবস্থা থেকে বিবাহ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দশটি সংস্কার কর্ম করার নিয়ম প্রচলিত আছে । শাস্ত্রীয় মতে একে দশবিধ সংস্কার বলা হয় । হিন্দুধর্ম বিশ্বাস করে , দেহে ব্রহ্ম প্রাপ্তির অনুকূল গুণের উন্মেষ করতে হলে দশবিধ সংস্কার বিধি অবশ্যই পালন করতে হবে । সংস্কার কার্যগুলাে । সম্পাদিত হলে জনক - জননীর দোষ থাকলেও গর্ভাবস্থা থেকেই তা প্রশমিত হয়ে মানুষের দেহে ব্ৰহ্ম প্রাপ্তির অনুকূল গুণের উন্মেষ ঘটে ।  দশবিধ সংস্কার সমূহকে ৪টি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায় :  গর্ভ সংস্কার : গর্ভাধান , পুংসবন , সীমান্তোন্নয

হিন্দুধর্মের ষড়দর্শন

ছবি
হিনধর্ম দর্শনের ধর্ম। দর্শন শাস্ত্রকে ঐতিহ্য অনুসারে ভাগ করা হয় ছ'টি দর্শনে বা দার্শনিক ধারায় ।এই ছ ' টি দর্শনের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, ছ'টি দার্শনিক ধারাই বেদসমূহের প্রতি ও কর্মযােগের বিধি বিধানের প্রতি তাদের আনুগত্য জানিয়েছে মানব_ অস্তিত্বের পরম লক্ষ্য হিসেবে “ চরম " ( অর্থা অতীন্দ্রিয়বাদী ) “ মােক্ষলাভ " এর মাধ্যমে ।এই ৬টি দর্শন পদ্ধতি ও তাদের প্রতিষ্ঠাতা হলেন_  ( ক ) সাংখ্য দর্শন - কপিল মুনি  ( খ ) যােগ বা পাতঞ্জল - ঋষি পাতঞ্জলী  ( গ ) ন্যায় - গৌতম মুনি  ( ঘ ) বৈশিষিক - ঋমি কণাদ  ( ঙ ) মীমাংসা - ঋষি জৈমিনি  ( চ ) বেদান্ত - শঙ্করাচার্য ও রামানুজ  সাংখ্য দর্শন :  সাংখ্য দর্শনের উৎপত্তি ও তার প্রকৃতি নিরূপণ এক জটিল ব্যাপার ।কারাে মতে সাংখ্য হচ্ছে এক ধর্মীয় , অতীন্দ্রিয়বাদী দর্শন ।আবার একে বস্তুবাদী দর্শন বলতেও অনেকে দ্বিধা করেননি ।বস্তুবাদী ও ভাববাদী উভয় ধরণের ধারণাসমূহ এই মতবাদের গভীরে নিহিত ছিল ।অত্যন্ত প্রাচীন যুগে সাংখ্যের উদ্ভব হলেও মৌর্য যুগের সাংখ্য সম্ভবতঃ এক স্বনির্ভর দার্শনিক ধারায় পরিণত হয় ।সাংখ্য দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা

হিন্দুদের দৈনিক প্রার্থনার মন্ত্র

ছবি
দৈনিক প্রার্থনা  হিন্দুদের অবশ্য কর্তব্য  মন্ত্র  সব হিন্দুর কর্তব্য দিনে অন্তত দুই বার নিম্নলিখিত মন্ত্রগুলাে আবৃত্তি করা । দশ বছরের বেশি বয়সের সব পুরুষ , নারীকে এই মন্ত্রগুলাে আবৃত্তি করতে হবে । বৈদিক সুরে ও ছন্দে উচ্চারিত হলে মন্ত্রগুলাে আবৃত্তিকারকে এক অভূতপূর্ব স্বাস্থ্য , অর্থ , বিষয় সম্পত্তি , শক্তি ও শান্তি দান করে । সর্ব প্রচেষ্টায় আবৃত্তিকার সাফল্য ও সুস্থ জীবন লাভ করেন । যে কোনাে স্থানে , যে কোনাে সময় আবৃত্তি করা । যায় , তবে শ্রেষ্ঠ ফলের জন্য প্রত্যুষে এবং সায়ংকালে মন্দিরে অথবা উদ্যানে অন্যদের সঙ্গে সম্মিলিত কণ্ঠে আবৃত্তি করা উচিত । অনেক হাজার বছর ধরে এই সব মন্ত্র শক্তিশালী বলে প্রমাণিত হয়েছে । সুর সংযােগে আবৃত্তি অলৌকিক কম্পনের সৃষ্টি করে , তার ফলে আবৃত্তিকারের চতুর্দিকে এক অদৃশ্য সুরক্ষা আবরণের সৃষ্টি হয় । আধুনিক বিজ্ঞান এখনও এই সব মন্ত্রশক্তির কারণ ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়নি , কিন্তু শক্তি উপলব্ধি করতে পেরেছে । যে কোনাে ব্যক্তি ( তিনি হিন্দু না হলেও ) এই সব মন্ত্র আবৃত্তি করতে পারেন ও তার দ্বারা উপকৃত হতে পারেন :  ওঁ শ্রী বিষ্ণুঃ ওঁ শ্রী বিষ্ণুঃ ওঁ শ্

গায়ত্রী মন্ত্র ও পাঠের নিয়ম

ছবি
গায়ত্রী পাঠ :  সবিতার উদেশ্যে বিশ্বামিত্র ঋষি কর্তৃক একটি ঋক ( মন্ত্র ) দৃষ্ট হয়েছিল । এ মন্ত্র এত প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল যে , হাজার হাজার বছর ধরে প্রত্যহ ত্রিসন্ধ্যা সহস্র কণ্ঠে উচ্চারিত হয়ে আসছে । এই ঋকটির নাম সাবিত্রী । গায়ত্রী ছন্দে রচিত বলে “ গায়ত্রী ” নামে প্রসিদ্ধ । তবে এ মন্ত্র গাইতে গাইতে সংসার যাতনা হতে পরিত্রাণ পাওয়া যায় বলে এর নাম গায়ত্রী রাখা হয়েছে । সকল মন্ত্রের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলে একে “ বেদমাতা " ও বলা হয় । গায়ত্রীটি হচ্ছে-  ওঁ ভুঃ ভূবঃ স্বঃ তৎ সবিতুর্বরেণং  ভর্গো দেবস্য ধীমহি  ধিয়াে যাে নঃ প্রচোদয়াৎ ওঁ ।  অর্থ : ত্রিভুবনে ব্রহ্মা , বিষ্ণু ও মহেশ্বরীরূপে বিদ্যমান সেই সৃষ্টি কর্তার বরণীয় তেজকে ধ্যান করি । এই তেজ ( স্বরূপশক্তি ) মায়াশক্তিকে পরাভূত করতে পারে । এ সবিতা আমার বুদ্ধিকে পরিচালিত করেন । গায়ত্রী পাঠের নিয়ম : প্রতিদিন সকাল , দুপুর ও সন্ধ্যায় হাত , পা ও মুখ ধুয়ে পূর্বমুখী বা উত্তরমুখী হয়ে এক মনে গায়ত্রী পাঠ করতে হয় । ১০৮ বার পাঠ করতে হয় । কমপক্ষে দশবার । সকালে গায়ত্রী পাঠের পূর্বে জল গ্রহণও করতে নেই ।  গায়ত্রী পাঠের

বাংলায় বেদ ঋগ্বেদ সংহিতা

ছবি
ভূমিকা - ঋগ্বেদ সংহিতা ০১.বাংলা বেদ - প্রথম মণ্ডল ০২. বাংলা বেদ - দ্বিতীয় মণ্ডল ০৩. বাংলা বেদ - তৃতীয় মণ্ডল ০৪. বাংলা বেদ - চতুর্থ মণ্ডল ০৫. বাংলায় বেদ-পঞ্চম মণ্ডল

ভগবান কৃষ্ণ এবং ভগবদগীতাঃ মূল শ্লোকসমূহ ।

ছবি
ভগবান কৃষ্ণ এবং ভগবদগীতাঃ মূল শ্লোকসমূহ ।  মূকং করােতি বাচালং , পঙ্গুং লংঘয়তে গিরিম্  যৎ কৃপা তমহং বন্দে , পরমানন্দ মাধবম্ ।  অর্থ- আমি ভগবান কৃষ্ণকে প্রণাম করি , যার কৃপায় মূক বাচাল হয় , পঙ্গু গিরি লঙ্ঘন করতে পারে । ঈশ্বরের কৃপা বর্ষণ হলে , কৃষ্ণময় জীবন আনন্দ ভূমিতে পরিণত হয় ।  ভগবান কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল মথুরায় ১৫৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে । তার পিতার নাম বাসুদেব ও মাতার নাম দেবকী । মথুরার রাজা ছিলেন কংস নামে এক নরপতি । তিনি ছিলেন সম্পর্কে দেবকীর ভাই অর্থাৎ কৃষ্ণের মাতুল । কংস দুবৃত্ত , অত্যাচারী ছিলেন , তার অত্যাচার থেকে কেউ নিস্তার পেতনা , এমনকি মুনি - ঋষিদেরও তিনি অব্যাহতি দিতেন না । কংস তার পিতা উগ্রসেনকে কারারুদ্ধ করে মথুরার রাজমুকুট তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন ।  এক দৈবজ্ঞ কংসকে বলেন , “ তােমার ভগ্নী দেবকীর অষ্টম গর্ভের পুত্রের হাতে তুমি নিহত হবে । তাই দেবকীর বিবাহের পরেই রাজা কংস দেবকী ও বাসুদেবকে কারাগারে নিক্ষেপ করেন । প্রত্যেক বার দেবকীর সন্তান ভূমিষ্ঠ হলেই কংস নিজে এসে শিশুটিকে হত্যা করতেন ।  দেবকী অষ্টমবার গর্ভবতী হলেন । বিষ্ণুর ভগবৎ সত্ত্বা দেবকীর অ