চতুর্থ মণ্ডল: সুক্ত - ৪২

অনুবাদ
১। হে পূষা (১) পথ পার করিয়ে দাও, পাপ বিনাশ কর; হে মেঘপুত্র দেব! আমাদরে অগ্নে যাও।

২। হে পুষা! আঘাতকারী, অপহরণকারী ও দৃষ্টাচারী যে কেউ আমাদের (বিপরীত পথ) দেখিয়ে দেয়, তাকে পথ হতে দূর করে দাও।

৩। সেই মার্গ প্রতিবন্ধক, তস্কর কুটিলাচারীকে পথ হতে দুরে তাড়িয়ে দাও।

৪। যে কেউ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়ই হরণ করে এবং অনিষ্ট সাধন ইচ্ছা করে, হে পূষা! তার পরসন্ত্রাপক দেহ তোমার পদের দ্বারা দলিত কর।

৫। হে শত্রুবিনাশী ও জ্ঞানবান পূষা! যেরূপ রক্ষণাদ্বারা পিতৃগণকে কউৎসাহিত করেছিলে, তেমার সে রক্ষণা প্রার্থনা করছি।

৬। হে সর্বধনসম্পন্ন, অনেক সুবর্ণায়ুধযুক্ত লোকগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ পূষা! তুমি অনন্তর ধনসমূহ দানে পরিণত কর।

৭। বিঘ্নকারী শত্রুদের অতিক্রম করে আমাদের নিয়ে যাও, সুখগম্য শোভনীয় পথদ্বারা আমাদরে নিয়ে যাও: হে পূষা! তুমি এ পথে আমাদের রক্ষণের উপায় কর।

৮। শোভনীয় তৃণযুক্ত দেশে আমাদরে নিয়ে যাও, পথে যেন নতুন সন্তাপ না হয়। হে পূষা! তুমি এ (পথে) আমাদের রক্ষনের উপায় কর।

৯। (আমাদের অনুগ্রহ করতে) সক্ষম হও, আমাদের গৃহ ধনে পরিপূর্ণ কর, অভষ্টবস্তুদান কর, আমাদের তীক্ষ্মতেঙ্গা কর, আমাদের উদর পূরণ কর; হে পূষা! তুমি এ পথে আমাদের রক্ষণের উপায় কর।

১০। আমরা পূষাকে নিন্দা করি না, সুক্ত দ্বারা স্তুতি করি, আমরা দর্শনীয় পূষার নিকট ধন যাচ্ঞা করি (২)। 

টীকা
১। সায়ণ বলেন পূষা অর্থে জগৎ পোষকপৃথিব্যাভিমানিদেবঃ। এটি সায়ণের ভ্রম। যাস্ক নিরুক্তকে লিখেছেন, সর্বোষাং ভূতানাং গোপায়িতা আদিত্যঃ। অর্থাঃ পূষা সূর্য। এ অর্থই সঙ্গত এবং সকল পনিডতদের সম্মত। মেঘ হতে অনেক সময় সূর্য বার হন, এ জন্য পূষাকে মেঘপুত্র বলা হয়েছে।

২। এ সুক্তের কোন কোন ঋক, বিশেষ করে ৮ ঋক হতে প্রতীয়মান হয় যে সে সময়ের হিন্দু আর্যদের মধ্যে কেন কোন অংশ মেঘপালক ব্যবসায় অবলম্বন করে সুন্দর তৃণ অন্বেষণে স্থানে স্থানে ভ্রমণ করত। পূষা বিশেষরূপে তাদেরই রক্ষক, অতএব তিনি ভ্রমণে পথদর্শক। সে কালে ভ্রমণে কি রূপ বিপদ আপদ ছিল তাও এ সুক্ত হতে জানা যায়। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বেদের চনৎকার কিছু শ্লোক।

বিষ্ণু দশ অবতারের পরিচয়

হিন্দুদের দৈনিক প্রার্থনার মন্ত্র