দ্বিতীয় মণ্ডল: সুক্ত - ১৩
অনুবাদ
১। হে সুসমিদ্ধ (১) নামক অগ্নি! আমাদরে যজমানের নিকট দেবগণকে আন; হে পাবক। হে দেবগণের আহ্বানকারী। তুমি যজ্ঞ সম্পাদন কর।
২। হে মেধাবী তনুনপাৎ (২) নামক অগ্নি! আমাদের রসবৎ যজ্ঞ অদ্য ভক্ষণার্থে দেবগণের নিকট নিয়ে যাও।
৩। এ যজনদেশে, এ যজ্ঞে, প্রিয়, মধুজিহ্ব, হব্যনিষ্পাদক, নরাশংস (৩) নামক অগ্নিকে আহ্বান করি।
৪। হে ঈলিত (৪) অগ্নি। সুখতমরথে দেবগণকে নিয়ে এস; মানুষদ্বারা তুমি দেবগণের আহ্বানকারী রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছ।
৫। হে বুদ্ধিমান ঋত্বিকগণ। পরস্পরসংযুক্ত এবং ঘৃতাচ্ছাদিত বহি (৫) কুশ বিস্তার কর, সে কুশের উপর ঘৃত দৃষ্ট হয়।
৬। দেবীদ্বার (৬) উদ্ঘাটিত হোক; সে দ্বার যজ্ঞের বর্ধন সাধক; দ্যুতিমান, এবং এতদিন জনশূন্য ছিল; অদ্য অবশ্যই যজ্ঞ সাধন করতে হবে।
৭। শোভনরূপযুক্ত নক্ত ও ঊষাকে (৭) এ আমাদের কুশে বসবার জন্য এ যজ্ঞে আহ্বান করছি।
৮। ঐ সুজিহ্ব, মেধাবী, হোতা দেবদ্বয়কে (৮) আহ্বান করছি; তাঁরা আমাদের এ যজ্ঞ সম্পাদন করুন।
৯। সুখপ্রদ ও ক্ষয়রহিত ইলা, সরস্বতী ও মহী (৯) এ দেবীত্রয় এ কুশে উপবেশন করুন।
১০। শ্রেষ্ঠ ও বহুবিধ রূপসম্পন্ন ত্বষ্টাকে (১০১) এ যজ্ঞে আহ্বান করছি; তিনি কেবল আমাদের পক্ষেই থাকুন।
১১। হে দেব বনষ্পতি (১১)! দেবতাদের হব্য সমর্পণ কর; হব্য দাতার যেন পরম জ্ঞান জন্মে।
১২। ইন্দ্রর জন্য যজমানের গৃহে স্বাহা (১২) দ্বারা যজ্ঞ সম্পন্ন কর; সে যজ্ঞে দেবগণকে আহআন করছি।
টীকা
১। এ সুক্তটি আপ্রীসুক্ত অর্থাৎ পশুযজ্ঞে এর নিয়োগ হত। এ সুক্তের বারটি ঋকে অগ্নিকে বারটি ভিন্ন নামে স্তুতি করা হয়েছে, ভিন্ন ভিন্ন ঋষি গোত্রের ভিন্ন ভিন্ন আপ্রী সুক্ত ছিল। মেধাতিথি দীর্ঘ তমা প্রভৃতি ঋষিদিগের আপ্রীসুক্তে নরাশংস ও তনুনপাৎ, এ উভয় নামেরই উল্লেখ আছে। গৃৎসমদদের আপ্রীসুক্তে নরাশংসের উল্লেখ আছে, তনুনপাতের উল্লেখ নেই। অন্যঋষি গোত্রের আপ্রীসক্তে তনুনপাতের উল্লেখ আছে, নরাশংসের উল্লেখ নেই। ঋগ্বেদে সর্বসুদ্ধ দশটি আপ্রীসুক্ত আছে, যথা- ১ মন্ডলের ১৩, ১৪২, ও ১৮৮ সুক্ত। ২ মন্ডলের ৩ সুক্ত। ৩ মন্ডলের ৪ সুক্ত। ৫ মন্ডলের ৫ সুক্ত। ৭ মন্ডলের ২ সুক্ত। ৯ মন্ডলের ৫ সুক্ত। ১০ মন্ডলের ৭০ ও ১১০ সুক্ত।
২। তনু+উন=তনুন, অর্থাৎ দুর্বলাকলেবর। তনুন+প=তনুনপ, অর্থাৎ দুর্বলাকারের পালক, অর্থাৎ ঘৃত। তুননপ+অৎ=তনুনপাৎ আঘৃতভোজী অগ্নি।
৩। নরাশংস অর্থ মানবপ্রশংসিত। এ নরাশংস নামের রূপান্তর জেন্দ অবস্থা গ্রন্থে পাওয়া যায়।
৪। ঈলিত অর্থাৎ স্তুত। অগ্নির একটি নাম ইলা সে নাম সুচনার্থে ঈলিত বিশেষণ প্রয়োগ হয়েছে। সায়ণ।
৫। বহিঃ অগ্নির একটি নাম, সে নাম সূচনার্থে এ শব্দ প্রয়োগ হয়েছে।
৬। দেবীদ্বার শব্দদ্বারা অগ্নির একটি নাম সূচিত হচ্ছে। সায়ণ।
৭। নক্ত ও উষা অর্থে রাত্রি ও প্রাত:কাল, কিন্তু এখানে এই দুই শব্দ তৎকালসম্ভুত অপ্নি বোঝাচ্ছে। সায়ণ।
৮। মুলে হোতারা দৈব্যা আছে এ শব্দদ্বারা অগ্নি সূচিত হচ্ছে। সায়ণ। ৯। তিনটি দেবীর নাম, এখানে অগ্নি বোঝাচ্ছে। সায়ণ।
১০। এখানে ত্বষ্টা শব্দদ্বারা অগি বোঝাচ্ছে। সায়ণ।
১১। অর্থাৎ বনষ্পতি নামক অগ্নি। সায়ণ। (*১২) সু+আ+হেব। যজ্ঞে হব্য প্রদানের সময় স্বাহা শবদ উচ্চারণ করতে হয়, এখানে এ শব্দে অগ্নিবেোঝাচ্ছে। সায়ণ।
১। হে সুসমিদ্ধ (১) নামক অগ্নি! আমাদরে যজমানের নিকট দেবগণকে আন; হে পাবক। হে দেবগণের আহ্বানকারী। তুমি যজ্ঞ সম্পাদন কর।
২। হে মেধাবী তনুনপাৎ (২) নামক অগ্নি! আমাদের রসবৎ যজ্ঞ অদ্য ভক্ষণার্থে দেবগণের নিকট নিয়ে যাও।
৩। এ যজনদেশে, এ যজ্ঞে, প্রিয়, মধুজিহ্ব, হব্যনিষ্পাদক, নরাশংস (৩) নামক অগ্নিকে আহ্বান করি।
৪। হে ঈলিত (৪) অগ্নি। সুখতমরথে দেবগণকে নিয়ে এস; মানুষদ্বারা তুমি দেবগণের আহ্বানকারী রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছ।
৫। হে বুদ্ধিমান ঋত্বিকগণ। পরস্পরসংযুক্ত এবং ঘৃতাচ্ছাদিত বহি (৫) কুশ বিস্তার কর, সে কুশের উপর ঘৃত দৃষ্ট হয়।
৬। দেবীদ্বার (৬) উদ্ঘাটিত হোক; সে দ্বার যজ্ঞের বর্ধন সাধক; দ্যুতিমান, এবং এতদিন জনশূন্য ছিল; অদ্য অবশ্যই যজ্ঞ সাধন করতে হবে।
৭। শোভনরূপযুক্ত নক্ত ও ঊষাকে (৭) এ আমাদের কুশে বসবার জন্য এ যজ্ঞে আহ্বান করছি।
৮। ঐ সুজিহ্ব, মেধাবী, হোতা দেবদ্বয়কে (৮) আহ্বান করছি; তাঁরা আমাদের এ যজ্ঞ সম্পাদন করুন।
৯। সুখপ্রদ ও ক্ষয়রহিত ইলা, সরস্বতী ও মহী (৯) এ দেবীত্রয় এ কুশে উপবেশন করুন।
১০। শ্রেষ্ঠ ও বহুবিধ রূপসম্পন্ন ত্বষ্টাকে (১০১) এ যজ্ঞে আহ্বান করছি; তিনি কেবল আমাদের পক্ষেই থাকুন।
১১। হে দেব বনষ্পতি (১১)! দেবতাদের হব্য সমর্পণ কর; হব্য দাতার যেন পরম জ্ঞান জন্মে।
১২। ইন্দ্রর জন্য যজমানের গৃহে স্বাহা (১২) দ্বারা যজ্ঞ সম্পন্ন কর; সে যজ্ঞে দেবগণকে আহআন করছি।
টীকা
১। এ সুক্তটি আপ্রীসুক্ত অর্থাৎ পশুযজ্ঞে এর নিয়োগ হত। এ সুক্তের বারটি ঋকে অগ্নিকে বারটি ভিন্ন নামে স্তুতি করা হয়েছে, ভিন্ন ভিন্ন ঋষি গোত্রের ভিন্ন ভিন্ন আপ্রী সুক্ত ছিল। মেধাতিথি দীর্ঘ তমা প্রভৃতি ঋষিদিগের আপ্রীসুক্তে নরাশংস ও তনুনপাৎ, এ উভয় নামেরই উল্লেখ আছে। গৃৎসমদদের আপ্রীসুক্তে নরাশংসের উল্লেখ আছে, তনুনপাতের উল্লেখ নেই। অন্যঋষি গোত্রের আপ্রীসক্তে তনুনপাতের উল্লেখ আছে, নরাশংসের উল্লেখ নেই। ঋগ্বেদে সর্বসুদ্ধ দশটি আপ্রীসুক্ত আছে, যথা- ১ মন্ডলের ১৩, ১৪২, ও ১৮৮ সুক্ত। ২ মন্ডলের ৩ সুক্ত। ৩ মন্ডলের ৪ সুক্ত। ৫ মন্ডলের ৫ সুক্ত। ৭ মন্ডলের ২ সুক্ত। ৯ মন্ডলের ৫ সুক্ত। ১০ মন্ডলের ৭০ ও ১১০ সুক্ত।
২। তনু+উন=তনুন, অর্থাৎ দুর্বলাকলেবর। তনুন+প=তনুনপ, অর্থাৎ দুর্বলাকারের পালক, অর্থাৎ ঘৃত। তুননপ+অৎ=তনুনপাৎ আঘৃতভোজী অগ্নি।
৩। নরাশংস অর্থ মানবপ্রশংসিত। এ নরাশংস নামের রূপান্তর জেন্দ অবস্থা গ্রন্থে পাওয়া যায়।
৪। ঈলিত অর্থাৎ স্তুত। অগ্নির একটি নাম ইলা সে নাম সুচনার্থে ঈলিত বিশেষণ প্রয়োগ হয়েছে। সায়ণ।
৫। বহিঃ অগ্নির একটি নাম, সে নাম সূচনার্থে এ শব্দ প্রয়োগ হয়েছে।
৬। দেবীদ্বার শব্দদ্বারা অগ্নির একটি নাম সূচিত হচ্ছে। সায়ণ।
৭। নক্ত ও উষা অর্থে রাত্রি ও প্রাত:কাল, কিন্তু এখানে এই দুই শব্দ তৎকালসম্ভুত অপ্নি বোঝাচ্ছে। সায়ণ।
৮। মুলে হোতারা দৈব্যা আছে এ শব্দদ্বারা অগ্নি সূচিত হচ্ছে। সায়ণ। ৯। তিনটি দেবীর নাম, এখানে অগ্নি বোঝাচ্ছে। সায়ণ।
১০। এখানে ত্বষ্টা শব্দদ্বারা অগি বোঝাচ্ছে। সায়ণ।
১১। অর্থাৎ বনষ্পতি নামক অগ্নি। সায়ণ। (*১২) সু+আ+হেব। যজ্ঞে হব্য প্রদানের সময় স্বাহা শবদ উচ্চারণ করতে হয়, এখানে এ শব্দে অগ্নিবেোঝাচ্ছে। সায়ণ।
মন্তব্যসমূহ