চতুর্থ মণ্ডল: সুক্ত - ৩৫
অনুবাদ
১। রক্ষার জন্য অগ্নিকে প্রথমে আহ্বান করি, রক্ষার জন্য মিত্র ও বরুণকে এ স্থানে আহ্বান করি, জগতের বিশ্রামহেতুভূত রাতকে আব্হান করি, রক্ষার জন্য দেব সবিতাকে আহ্বান করি।
২। অন্ধকারপূর্ণ অন্তরীক্ষ দিয়ে বারবার ভ্রমণ করে, দেব ও মনুষ্যকে সচেতন করে, দেব সবিতা হিরস্ময় রথ দ্বারা ভূবন সমুদয় দেখতে দেখতে ভ্রমণ করছেন।
৩। দেব সবিতা ঊর্ধ্বগামী ও অধোগামী পথ দিয়ে গমন করেন; সেই অর্চনাভাজন দেব দুটি শ্বেত অশ্ব দ্বারা গমন করেন; তিনি সমস্ত পাপ বিনাশ করতে করতে দুর দেশ হতে আসছেন।
৪। যজনীয় ও বিচিত্ররশ্মি সবিতা জগৎ সমূহের অন্ধকার বিনাশার্থে তেজ ধারণ করে নিকটস্থ সুবর্ণ বিচত্রিত, সুবর্ণ শঙ্কুযুক্ত বৃহৎ রথে আরোহণ করলেন।
৫। শ্যাব নামক শ্বেত পদযুক্ত অশ্বগণ সুবর্ণযুগ বিশিষ্ট রথ বহন করে জনসমূহের নিকট আলোক প্রকাশ করছেন; দেব সবিতার সমীপে জনসমূহ ও জগৎসমূহ উপস্থিত আছে।
৬। দ্যুলোক প্রভূতি তিনটি লোক আছে দুটি, দ্যুলোক ও ভূলোক সূর্যের সমীপস্থ একটি (অন্তরীক্ষ) যমের ভবনে গমনকারীদের পথ। (১) রথ যেরূপ আণির উপর অবলম্বন করে, অমর চন্দ্র নক্ষত্রাদি সবিতাকে সেরূপ অবলম্বন করে আছে। যিনি সবিতাকে জানেন তিনি এ বিষয়ে বলুন।
৭। গভীর কম্পন বিশিষ্ট অসুর, সূপর্ণ রশ্মি (২) অন্তরীক্ষাদি (তিন লোক) ব্যাপ্ত করছে। এক্ষণে সূর্য কোথায় কে জানে? কোন দিব্য লোকে তার রশ্মি বিস্তুত হয়েছে?
৮। সবিতা পৃথিবীর অষ্ট দিক প্রকাশিত করেছেন, এবং প্রাণীদের তিন জগৎ ও সপ্তসিন্ধু প্রকাশিত করেছেন। সে হিরষ্ময় চক্ষু বিশিষ্ট সবিতা হবদাতা যজমানকে বরণীয় দ্রব্য দান করে এ স্থানে আসুন।
৯। হিরণ্যপাণি বিবিধদর্শনযুক্ত সবিতা উভয় লোকের মধ্যে গমন করছেন, রোগাদি নিরাকরণ করছেন, সূর্যের নিকট যাচ্ছেন (৩) এবং তমোনাশক তেজ দ্বারা আকাশ ব্যাপ্ত করছেন।
১০। হিরণাহস্ত অসুর, সুনেতা, হর্ষদাতা, ও ধনবান সবিতা অভিমুখ হয়ে আসুন; সে দেব রাক্ষস ও ষাতুধান (৪) দের নিরাকরণ করে প্রতিরাতি স্তুতি প্রাপ্ত হয়ে অবস্থানকরেন।
১১। হে সবিতা! তোমার পথ পূর্বসিদ্ধ, ধুলি রহিত ও অন্তরীক্ষে সুনির্মিত; সে সুগম পথ সমূহ দিয়ে এসে অদ্য আমাদের রক্ষা কর; হে দেব! আমাদের কথা (দেবগণের নিকট) অধিক করে বল।
টীকা
১। প্রেতপুরুষগণ অন্তরীক্ষ দিয়ে যমলোকে গমনকরে। সায়ণ! পুরণে যম অর্থ কি তা আমরা সকলেই জানি, কিন্তু ঋগ্বেদে প্রথমে কাকে যম বলত? বিবস্বানের দ্বারা সরণ্যুর গর্ভে অশ্বিদ্বয়ের জন্ম হয় এবং যম ও তাঁর ভগ্নী যমীরও জন্ম হয়। বিবস্বান, অর্থে আকাশ, সরণ্যু অর্থে ঊষাকাল। তাদের যমজ সন্তান কারা? আচার্য মক্ষমুলয়ের মতে দিন ও রাতকে প্রথম ঋষিগণ যম ও যমী নাম দিয়েছিলেন। ঋষিগণ, যেরূপ পূর্বদিককে জীবনের উৎপত্তিস্থল মনে করতেন, পশ্চিম দিককে সেরূপ জীবনের অবসান মনের করতেন। সূর্য পূর্বদিকে উদিত হয়ে পশ্চিম দিকে অন্তর্হিত হতেন, অর্থাৎ জীবনের পথ ভ্রমণ করে পরলোকের পথ দেখাতেন। এ রূপে যম পরলোকের রাজা, এই অনুভব উদয় হল। Science of Language. (২) সায়ণ অসুর অর্থে প্রাণদায়ী ও সুপর্ণ অর্থে সূর্য রশ্মি করেছেন। কিন্তু অসুর সম্বন্ধে ২৪ সুক্তের ১৩ ঋকের টীকা দেখুন।
৩। সায়ণ বলেন সূর্য ও সবিতা এক দেব হলেও ভিন্ন ভিন্ন রূপ, সুতরাং একে অন্যের নিকট গমন করতে পারেন। ২২ সুক্তের ৫ ঋকের টীকা দেখুন।
৪। বেদের ষাতুধান একপ্রকার মায়াবী পাপমতি জীব ইরানীদের জেন্দ অবস্থায় তাদের নাম ষাতুমান।
১। রক্ষার জন্য অগ্নিকে প্রথমে আহ্বান করি, রক্ষার জন্য মিত্র ও বরুণকে এ স্থানে আহ্বান করি, জগতের বিশ্রামহেতুভূত রাতকে আব্হান করি, রক্ষার জন্য দেব সবিতাকে আহ্বান করি।
২। অন্ধকারপূর্ণ অন্তরীক্ষ দিয়ে বারবার ভ্রমণ করে, দেব ও মনুষ্যকে সচেতন করে, দেব সবিতা হিরস্ময় রথ দ্বারা ভূবন সমুদয় দেখতে দেখতে ভ্রমণ করছেন।
৩। দেব সবিতা ঊর্ধ্বগামী ও অধোগামী পথ দিয়ে গমন করেন; সেই অর্চনাভাজন দেব দুটি শ্বেত অশ্ব দ্বারা গমন করেন; তিনি সমস্ত পাপ বিনাশ করতে করতে দুর দেশ হতে আসছেন।
৪। যজনীয় ও বিচিত্ররশ্মি সবিতা জগৎ সমূহের অন্ধকার বিনাশার্থে তেজ ধারণ করে নিকটস্থ সুবর্ণ বিচত্রিত, সুবর্ণ শঙ্কুযুক্ত বৃহৎ রথে আরোহণ করলেন।
৫। শ্যাব নামক শ্বেত পদযুক্ত অশ্বগণ সুবর্ণযুগ বিশিষ্ট রথ বহন করে জনসমূহের নিকট আলোক প্রকাশ করছেন; দেব সবিতার সমীপে জনসমূহ ও জগৎসমূহ উপস্থিত আছে।
৬। দ্যুলোক প্রভূতি তিনটি লোক আছে দুটি, দ্যুলোক ও ভূলোক সূর্যের সমীপস্থ একটি (অন্তরীক্ষ) যমের ভবনে গমনকারীদের পথ। (১) রথ যেরূপ আণির উপর অবলম্বন করে, অমর চন্দ্র নক্ষত্রাদি সবিতাকে সেরূপ অবলম্বন করে আছে। যিনি সবিতাকে জানেন তিনি এ বিষয়ে বলুন।
৭। গভীর কম্পন বিশিষ্ট অসুর, সূপর্ণ রশ্মি (২) অন্তরীক্ষাদি (তিন লোক) ব্যাপ্ত করছে। এক্ষণে সূর্য কোথায় কে জানে? কোন দিব্য লোকে তার রশ্মি বিস্তুত হয়েছে?
৮। সবিতা পৃথিবীর অষ্ট দিক প্রকাশিত করেছেন, এবং প্রাণীদের তিন জগৎ ও সপ্তসিন্ধু প্রকাশিত করেছেন। সে হিরষ্ময় চক্ষু বিশিষ্ট সবিতা হবদাতা যজমানকে বরণীয় দ্রব্য দান করে এ স্থানে আসুন।
৯। হিরণ্যপাণি বিবিধদর্শনযুক্ত সবিতা উভয় লোকের মধ্যে গমন করছেন, রোগাদি নিরাকরণ করছেন, সূর্যের নিকট যাচ্ছেন (৩) এবং তমোনাশক তেজ দ্বারা আকাশ ব্যাপ্ত করছেন।
১০। হিরণাহস্ত অসুর, সুনেতা, হর্ষদাতা, ও ধনবান সবিতা অভিমুখ হয়ে আসুন; সে দেব রাক্ষস ও ষাতুধান (৪) দের নিরাকরণ করে প্রতিরাতি স্তুতি প্রাপ্ত হয়ে অবস্থানকরেন।
১১। হে সবিতা! তোমার পথ পূর্বসিদ্ধ, ধুলি রহিত ও অন্তরীক্ষে সুনির্মিত; সে সুগম পথ সমূহ দিয়ে এসে অদ্য আমাদের রক্ষা কর; হে দেব! আমাদের কথা (দেবগণের নিকট) অধিক করে বল।
টীকা
১। প্রেতপুরুষগণ অন্তরীক্ষ দিয়ে যমলোকে গমনকরে। সায়ণ! পুরণে যম অর্থ কি তা আমরা সকলেই জানি, কিন্তু ঋগ্বেদে প্রথমে কাকে যম বলত? বিবস্বানের দ্বারা সরণ্যুর গর্ভে অশ্বিদ্বয়ের জন্ম হয় এবং যম ও তাঁর ভগ্নী যমীরও জন্ম হয়। বিবস্বান, অর্থে আকাশ, সরণ্যু অর্থে ঊষাকাল। তাদের যমজ সন্তান কারা? আচার্য মক্ষমুলয়ের মতে দিন ও রাতকে প্রথম ঋষিগণ যম ও যমী নাম দিয়েছিলেন। ঋষিগণ, যেরূপ পূর্বদিককে জীবনের উৎপত্তিস্থল মনে করতেন, পশ্চিম দিককে সেরূপ জীবনের অবসান মনের করতেন। সূর্য পূর্বদিকে উদিত হয়ে পশ্চিম দিকে অন্তর্হিত হতেন, অর্থাৎ জীবনের পথ ভ্রমণ করে পরলোকের পথ দেখাতেন। এ রূপে যম পরলোকের রাজা, এই অনুভব উদয় হল। Science of Language. (২) সায়ণ অসুর অর্থে প্রাণদায়ী ও সুপর্ণ অর্থে সূর্য রশ্মি করেছেন। কিন্তু অসুর সম্বন্ধে ২৪ সুক্তের ১৩ ঋকের টীকা দেখুন।
৩। সায়ণ বলেন সূর্য ও সবিতা এক দেব হলেও ভিন্ন ভিন্ন রূপ, সুতরাং একে অন্যের নিকট গমন করতে পারেন। ২২ সুক্তের ৫ ঋকের টীকা দেখুন।
৪। বেদের ষাতুধান একপ্রকার মায়াবী পাপমতি জীব ইরানীদের জেন্দ অবস্থায় তাদের নাম ষাতুমান।
মন্তব্যসমূহ