চতুর্থ মণ্ডল: সুক্ত - ৩৬
অনুবাদ
১। তোমরা বহু সংখ্যক প্রজা, তোমরা দেবতা কামনা করছ, তোমাদের জন্য মহৎ অগ্নিকে সুক্ত বাক্য দ্বারা প্রার্থনা করি, অন (ঋষিগণও) সে অগ্নির স্তব করে থাকেন।
২। লোকে বলবর্ধনকারী অগ্নিকে অবলম্বন করেছে; হে অগ্নি আমরা হব্য নিয়ে তোমার পরিচর্যা করি; তুমি অন্ন দানে তৎপর হয়ে অদ্য এ কর্মে আমাদের প্রতি প্রসন্নমনা হও এবং আমাদরে রক্ষক হও।
৩। হে অগ্নি! তুমি দেবগণের হোতা এবং সর্বজ্ঞ, আমরা তোমাকে বরণ করি। তুমি মহৎ এবং নিত্য, তোমার দীপ্তি বিস্তুত হচ্ছে, তোমার রশ্মি আকাশ স্পর্শ করছে।
৪। হে অগ্নি! তুমি পুরাতন দুত। বরুণ ও মিত্র ও অর্যমা তোমাকে সম্যকরূপে দীপ্তিমান করছেন। যে মনুষ্য তোমাকে (হব্য) ান করে সে তোমার সহায়তায় সমস্ত ধন জয় করে।
৫। হে অগ্নি! তুমি হর্যদাতা তুমি দেবগণকে আহ্বান কর; তুমি প্রজাদের গৃহপতি, তুমি দেবগণের দূত। দেবগণ যে সকল অমোঘ ব্রত সম্পাদন করেন তা সমস্তই তোমাতে মিলিত হয়।
৬। হে যুবা অগ্নি! তুমি সৌভাগ্যসম্পন্ন; তোমাকে লক্ষ্য করে সমস্ত হব্য প্রক্ষেপ করা হয়। তুমি আমাদের প্রতি প্রসন্নমনা হয়ে অদ্যই বা অন্য সময়ে শোভনীয় বীর্যশালী দেবগণকে অর্চনা কর।
৭। যজমানেরা নমস্কারপূর্বক সেই স্বয়ং দীপ্তিমান অগ্নিকে এরূপে উপাসনা করেন। শত্রু বিজিগীষু মানুষেরা হোত্রদের দ্বারা (১) অগ্নকে প্রদীপ্ত করে।
৮। দেবগণ প্রহার করে বৃত্রকে হনন করেছেন, উভয় জগৎ এবং অন্তরীক্ষ নিবাসার্থে বিস্তুত করেছেন। অগ্নি ধনবান, তিনি গোজয়ার্থে যুদ্ধে শব্দায়মান অশ্বের ন্যায় সর্বতোভাবে আহুত হয়ে কম্বকে অভীষ্ট দ্রব্য বর্ষণ করুন।
৯। হে প্রশস্ত অগ্নি! উপবেশন কর, তুমি মহৎ এবং দেবতাদের অতিশয় কামনা কর, তুমি দীপ্তিপূর্ণ হও। হে মেধাবী উৎকৃণ্ট অপ্নি। গমনশীল ও দর্শনীয় ধুম উৎপাদন কর।
১০। হে হব্যব্যাপী অগ্নি! তুমি অতিশয় পূজাভাজন, সকল দেবগণ মনুর জন্য তোমাকে এই যজ্ঞস্থানে ধারণ করেছিলেন; তুমি ধন দ্বারা প্রীতি সম্পাদন কর, অর্চনাভাজন অতিথি সমেত কব তোমাকে ধারণ করেছেন, বর্ষণকারী ইন্দ্র তোমাকে ধারণ করেছেন অন্য স্তোতাও তোমাকে ধারণ করেছেন।
১১। অর্চনাভাজন অতিথিপ্রিয় কব অগ্নিকে আদিত্য হতেও অধিক দীপ্তিমান করেছেন। সে অগ্নির গমনশীল রশ্মি দীপ্তিমান রয়েছে। এ ঝকসমূহ সে অগ্নিকে বর্ধন করে, আমরাও বর্ধন করি।
১২। হে অন্নবান অগ্নি! আমাদের ধন পূরণ কর। তোমার দ্বারা দেবগণকে প্রাপ্ত হওয়া যায়, তুমি প্রসিদ্ধ অন্নের ঈশ্বর, তুমি মহৎ, আমাদের সুখী কর।
১৩। সবিতা দেবের ন্যায় আমাদের রক্ষণের জন্য উন্নত হও, উন্নত হয়ে অন্নদাতা হও, কেন না বিচিত্র যজ্ঞ সম্পাদকদের দ্বারা আমরা তোমাকে আহ্বান করছি।
১৪। উন্নত হয়ে আমাদের জ্ঞান দ্বারা পাপ হতে রক্ষা কর; কল রাক্ষস দহন কর; আমাদের উন্নত কর, যেন আমরা জগতে বিচরণ করতে পারি বং আমাদের হব্যরূপ ধন দেবগণের সদনে বহন কর, যেন আমরা জীবিত থাকতে পারি।
১৫। হে বৃহৎরশ্মি যুবা অগ্নি! আমাদের রাক্ষস হতে রক্ষা কর; যে ধন দান করে না এরূপ ধূর্ত লোক হতে রক্ষা কর; হিংসক পশু হতে রক্ষা কর এবং জিঘাংসাপরায়ণ শত্রু হতে রক্ষা কর।
১৬। হে তপ্তরশ্মিযুক্ত অগ্নি! যেরূপ কঠিন দন্ড দ্বারা লোকে (ভান্ডাদি) নষ্ট করে, সেরূপ যারা ধন দান করে না তাদের সর্বদা সংহার কর। অন্য যে রিপু আমাদের বিরুদ্ধাচারী, অন্য যে মনুষ্য আয়ুধ দ্বারা আমাদের প্রহার করে, তারা যেন আমাদের প্রভু না হয়।
১৭। শোভনীয় বীর্যের জন্য অগ্নিকে যাচ্ঞা করা হয়েছে; অগ্নি কবকে সৌভাগ্য দান করেছেন; অগ্নি আমার মিত্রদের রক্ষা করেছেন; অর্চনাভাজন অতিথি বিশিষ্ট ঋষিকে রক্ষা করেছেন; এবং ধনাদি দানার্থে অন্য যে কেউ অগ্নির স্তুতি করেছে তাকে রক্ষা করেছেন।
১৮। সদ্যুদমনকারী অগ্নির সাথে তুবশু ও যদু উগ্রাদেবকে দুরদেশ হতে আহ্বান করি; অগ্নি নববাস্তত্ব ও বৃহদ্রথ ও তুর্বীতিকে এ স্থানে আনুন (২)
৯। হে অগ্নি! তুমি জ্যোতিরূপ, বিবিধ জাতীয় মানুষের জন্য মনু তোমাকে স্থাপন করেছিলেন; হে অগ্নি! তুমি যজ্ঞের জন্য উৎপন্ন হয়ে, হব্য দ্বারা তৃপ্ত হয়ে, কবের প্রতি দীপ্তিমান হয়েছ; মানুষেরা তোমাকে নমস্কার করে।
২০। অগ্নির অর্চিৎ প্রদীপ্ত, বলবান ও ভয়স্কর, এবং তাকে প্রত্যয় করা যায় না। হে অগ্নি! রাক্ষসদের যাতুধানদের এবং বিশ্বভক্ষক শত্রুকে দহনকর।
টীকা
১। সে হে ত্রগণ কারা? সপ্ত হোত্রী প্রাচী বষটকুম্বন্তি। সায়ণ। সে সাত জন ঋত্বিক বা পুরোহিত এই যথা (১) যজমান, যিনি যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন, (২) হোতা, বিনি মন্ত্র পাঠ করেন, (৩) উদগাতা, যিনি মন্ত্র গান করেন, (৪) পোতা যিনি হব্য প্রস্তুত করেন, (৫) নেষ্টা, যিনি হব্য অগ্নিতে প্রক্ষেপ করেন, (৬) ব্রন্ধা যিনি সমুদায় তত্ত্ববধারণ করেন (৭) রক্ষ যিনি দ্বার রক্ষা করেন।
২। এ ছয় জনকে সায়ণ রাজষি বলে বর্ণনা করেছেন। পুরাণে যদু ও তুর্বশু যযাতি নরপতির পুত্রদ্বয়। তুর্বীতি সম্বন্ধে ৬১ সুক্তের ১১ ঋকের টীকা দেখুন
১। তোমরা বহু সংখ্যক প্রজা, তোমরা দেবতা কামনা করছ, তোমাদের জন্য মহৎ অগ্নিকে সুক্ত বাক্য দ্বারা প্রার্থনা করি, অন (ঋষিগণও) সে অগ্নির স্তব করে থাকেন।
২। লোকে বলবর্ধনকারী অগ্নিকে অবলম্বন করেছে; হে অগ্নি আমরা হব্য নিয়ে তোমার পরিচর্যা করি; তুমি অন্ন দানে তৎপর হয়ে অদ্য এ কর্মে আমাদের প্রতি প্রসন্নমনা হও এবং আমাদরে রক্ষক হও।
৩। হে অগ্নি! তুমি দেবগণের হোতা এবং সর্বজ্ঞ, আমরা তোমাকে বরণ করি। তুমি মহৎ এবং নিত্য, তোমার দীপ্তি বিস্তুত হচ্ছে, তোমার রশ্মি আকাশ স্পর্শ করছে।
৪। হে অগ্নি! তুমি পুরাতন দুত। বরুণ ও মিত্র ও অর্যমা তোমাকে সম্যকরূপে দীপ্তিমান করছেন। যে মনুষ্য তোমাকে (হব্য) ান করে সে তোমার সহায়তায় সমস্ত ধন জয় করে।
৫। হে অগ্নি! তুমি হর্যদাতা তুমি দেবগণকে আহ্বান কর; তুমি প্রজাদের গৃহপতি, তুমি দেবগণের দূত। দেবগণ যে সকল অমোঘ ব্রত সম্পাদন করেন তা সমস্তই তোমাতে মিলিত হয়।
৬। হে যুবা অগ্নি! তুমি সৌভাগ্যসম্পন্ন; তোমাকে লক্ষ্য করে সমস্ত হব্য প্রক্ষেপ করা হয়। তুমি আমাদের প্রতি প্রসন্নমনা হয়ে অদ্যই বা অন্য সময়ে শোভনীয় বীর্যশালী দেবগণকে অর্চনা কর।
৭। যজমানেরা নমস্কারপূর্বক সেই স্বয়ং দীপ্তিমান অগ্নিকে এরূপে উপাসনা করেন। শত্রু বিজিগীষু মানুষেরা হোত্রদের দ্বারা (১) অগ্নকে প্রদীপ্ত করে।
৮। দেবগণ প্রহার করে বৃত্রকে হনন করেছেন, উভয় জগৎ এবং অন্তরীক্ষ নিবাসার্থে বিস্তুত করেছেন। অগ্নি ধনবান, তিনি গোজয়ার্থে যুদ্ধে শব্দায়মান অশ্বের ন্যায় সর্বতোভাবে আহুত হয়ে কম্বকে অভীষ্ট দ্রব্য বর্ষণ করুন।
৯। হে প্রশস্ত অগ্নি! উপবেশন কর, তুমি মহৎ এবং দেবতাদের অতিশয় কামনা কর, তুমি দীপ্তিপূর্ণ হও। হে মেধাবী উৎকৃণ্ট অপ্নি। গমনশীল ও দর্শনীয় ধুম উৎপাদন কর।
১০। হে হব্যব্যাপী অগ্নি! তুমি অতিশয় পূজাভাজন, সকল দেবগণ মনুর জন্য তোমাকে এই যজ্ঞস্থানে ধারণ করেছিলেন; তুমি ধন দ্বারা প্রীতি সম্পাদন কর, অর্চনাভাজন অতিথি সমেত কব তোমাকে ধারণ করেছেন, বর্ষণকারী ইন্দ্র তোমাকে ধারণ করেছেন অন্য স্তোতাও তোমাকে ধারণ করেছেন।
১১। অর্চনাভাজন অতিথিপ্রিয় কব অগ্নিকে আদিত্য হতেও অধিক দীপ্তিমান করেছেন। সে অগ্নির গমনশীল রশ্মি দীপ্তিমান রয়েছে। এ ঝকসমূহ সে অগ্নিকে বর্ধন করে, আমরাও বর্ধন করি।
১২। হে অন্নবান অগ্নি! আমাদের ধন পূরণ কর। তোমার দ্বারা দেবগণকে প্রাপ্ত হওয়া যায়, তুমি প্রসিদ্ধ অন্নের ঈশ্বর, তুমি মহৎ, আমাদের সুখী কর।
১৩। সবিতা দেবের ন্যায় আমাদের রক্ষণের জন্য উন্নত হও, উন্নত হয়ে অন্নদাতা হও, কেন না বিচিত্র যজ্ঞ সম্পাদকদের দ্বারা আমরা তোমাকে আহ্বান করছি।
১৪। উন্নত হয়ে আমাদের জ্ঞান দ্বারা পাপ হতে রক্ষা কর; কল রাক্ষস দহন কর; আমাদের উন্নত কর, যেন আমরা জগতে বিচরণ করতে পারি বং আমাদের হব্যরূপ ধন দেবগণের সদনে বহন কর, যেন আমরা জীবিত থাকতে পারি।
১৫। হে বৃহৎরশ্মি যুবা অগ্নি! আমাদের রাক্ষস হতে রক্ষা কর; যে ধন দান করে না এরূপ ধূর্ত লোক হতে রক্ষা কর; হিংসক পশু হতে রক্ষা কর এবং জিঘাংসাপরায়ণ শত্রু হতে রক্ষা কর।
১৬। হে তপ্তরশ্মিযুক্ত অগ্নি! যেরূপ কঠিন দন্ড দ্বারা লোকে (ভান্ডাদি) নষ্ট করে, সেরূপ যারা ধন দান করে না তাদের সর্বদা সংহার কর। অন্য যে রিপু আমাদের বিরুদ্ধাচারী, অন্য যে মনুষ্য আয়ুধ দ্বারা আমাদের প্রহার করে, তারা যেন আমাদের প্রভু না হয়।
১৭। শোভনীয় বীর্যের জন্য অগ্নিকে যাচ্ঞা করা হয়েছে; অগ্নি কবকে সৌভাগ্য দান করেছেন; অগ্নি আমার মিত্রদের রক্ষা করেছেন; অর্চনাভাজন অতিথি বিশিষ্ট ঋষিকে রক্ষা করেছেন; এবং ধনাদি দানার্থে অন্য যে কেউ অগ্নির স্তুতি করেছে তাকে রক্ষা করেছেন।
১৮। সদ্যুদমনকারী অগ্নির সাথে তুবশু ও যদু উগ্রাদেবকে দুরদেশ হতে আহ্বান করি; অগ্নি নববাস্তত্ব ও বৃহদ্রথ ও তুর্বীতিকে এ স্থানে আনুন (২)
৯। হে অগ্নি! তুমি জ্যোতিরূপ, বিবিধ জাতীয় মানুষের জন্য মনু তোমাকে স্থাপন করেছিলেন; হে অগ্নি! তুমি যজ্ঞের জন্য উৎপন্ন হয়ে, হব্য দ্বারা তৃপ্ত হয়ে, কবের প্রতি দীপ্তিমান হয়েছ; মানুষেরা তোমাকে নমস্কার করে।
২০। অগ্নির অর্চিৎ প্রদীপ্ত, বলবান ও ভয়স্কর, এবং তাকে প্রত্যয় করা যায় না। হে অগ্নি! রাক্ষসদের যাতুধানদের এবং বিশ্বভক্ষক শত্রুকে দহনকর।
টীকা
১। সে হে ত্রগণ কারা? সপ্ত হোত্রী প্রাচী বষটকুম্বন্তি। সায়ণ। সে সাত জন ঋত্বিক বা পুরোহিত এই যথা (১) যজমান, যিনি যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন, (২) হোতা, বিনি মন্ত্র পাঠ করেন, (৩) উদগাতা, যিনি মন্ত্র গান করেন, (৪) পোতা যিনি হব্য প্রস্তুত করেন, (৫) নেষ্টা, যিনি হব্য অগ্নিতে প্রক্ষেপ করেন, (৬) ব্রন্ধা যিনি সমুদায় তত্ত্ববধারণ করেন (৭) রক্ষ যিনি দ্বার রক্ষা করেন।
২। এ ছয় জনকে সায়ণ রাজষি বলে বর্ণনা করেছেন। পুরাণে যদু ও তুর্বশু যযাতি নরপতির পুত্রদ্বয়। তুর্বীতি সম্বন্ধে ৬১ সুক্তের ১১ ঋকের টীকা দেখুন
মন্তব্যসমূহ