প্রথম মণ্ডল: সুক্ত - ১

অনুবাদ
১। অগ্নি (১) যজ্ঞের পুরোহিত (২) এবং দীপ্তিমান; অগ্নি দেবগণের আহ্বানকারী ঋত্বিক এবং প্রভূতরত্নধারী: আমি অগ্নির স্তুতি করি।

২। অগ্নি পূর্ব ঋষিদের স্তুতিভাজন ছিলেন, নুতন ঋষিদেরো স্তুতিভাজন; তিনি দেবগণকে এ যজ্ঞে আনুন।

৩। অগ্নিদ্বারা যজমান ধনলাভ করেন, সে ধন দিন দিন বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ও যশোযুক্ত হয় ও তা দিয়ে অনেক বীরপুরুষ নিযুক্ত করা যায়।

৪। হে অগ্নি! তুমি যে যজ্ঞ চারদিকে বেষ্টন করে থাক সে যজ্ঞ কেউ হিংসা করতে পারে না এবং সে যজ্ঞ নি:সন্দেহেই দেবগণের নিকটে গমন করে।

৫। অগ্নি দেবগণের আহ্বানকারী; সিদ্ধকর্মা, সভ্যপরায়ণ ও প্রভূত ও বিবিধ কীর্তিযুক্ত; সে দেব দেবগণের সঙ্গে এ যজ্ঞে আগমন করুন।

৬। হে অগ্নি! তুমি হব্যদাতা যজমানের যে কল্যাণ সাধন করবে, হে অঙ্গিরা সে কল্যাণ প্রকৃত তোমারই।

৭। হে অগ্নি! আমরা দিনে দিনে দিনরাত মনের সাথে নমস্কার সম্পাদন করে তোমার সমীপে আসছি।

৮। তুমি দীপ্যমান, তুমি যজ্ঞের রক্ষক, যজ্ঞের অতিশয় দীপ্তিকারক, এবং যজ্ঞশালায় বর্ধনশীল।

৯। পুত্রের নিকট পিতা যেরূপ অনায়াসে অধিগম্য, হে অগ্নি! তুমি আমাদের নিকট সেরূপ হো; মঙ্গলার্থ আমাদরে নিকটে বাস কর।

টীকা
১। নৈরুক্তদের মতে দেব তিন জন, পৃথিবীতে অগ্নি, অন্তরিক্ষে ইন্দ্র বা বায়ু এবং আকাশে সূর্য। তাঁদের মহাভাগ্য কারণ এক জনের অনেকগুলি নাম, অথবা এটি পৃথক পৃথক কর্মের জন্য, যথা হোতা, অধ্বর্যু, ব্রহ্মা, উদগাতা অথবা তাঁরা পৃথক পৃথক দেবই ছিলেন, কেন না তাঁদের পৃথকরূপে স্তুতি করা হয়েছে এবং পৃথক পৃথক নাম দেওয়া হয়েছে। নিরুক্ত ৭।। ৫। এ থেকে বোঝা যায় যে সে সময়ে ভারতবর্ষের তিনজন অগ্রগন্য দেবের মধ্যে অগ্নি একজন ছিলেন। ঋগ্বেদ সংহিতায় অগ্নি সমন্ধে যতগুলি সুক্ত আছে, ইন্দ্র ভিন্ন অন্য কোনো দেব সম্বন্ধে ততগুলি নেই।
২। অগ্নি না হলে যজ্ঞ হয় না, এ জন্য ঋগ্বেদে অনেক স্থলে অগ্নিকে পুরোহিত বলা হয়েছে। যথা রাজ্ঞ: পুরোহিত: তদভীষ্টং সম্পাদয়তি তথা অগ্নিরপি অপেক্ষিতং হোমং সম্পাদয়তি যদ্বা যজ্ঞস্য সম্বন্ধিনি পূর্বভাগে আহবনীয়রূপেণ অবস্থিতম। সায়ণ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বেদের চনৎকার কিছু শ্লোক।

বিষ্ণু দশ অবতারের পরিচয়

হিন্দুদের দৈনিক প্রার্থনার মন্ত্র