হিন্দুধর্মের ঐতিহাসিক সভ্যতা গুলো

ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান না থাকলে ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা সহজ নয়। হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হলে এর প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে জানা আবশ্যক। তাই এই সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করা যেতে পারে।

আদি সভ্যতা


ভূতত্ত্ববিদদের মতে পৃথিবীর বয়স ৫৭০ কোটি বছর। সৃষ্টির শুরুতে যেসব শিলা গঠিত হয় তা বর্তমানে পৃথিবীর সব ঢাল-আকার ভূ-খণ্ডে পাওয়া যায়। এমনকি একটি ভূখণ্ড ভারত উপদ্বীপ। একদা-ভারতবর্ষে আফ্রিকার মাদাগাস্কার দক্ষিণ আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়া এবং অ্যান্টার্কটিকার সমন্বয়ে গঠিত দক্ষিণ গোলার্ধে গগুোয়ানাল্যাগু নামের একটি বিশাল ভূখন্ড ছিল। উত্তর গোলার্ধে ও অনুরূপ একটি ভূখণ্ড ছিল। আর এই দু'টোর মাঝে বিরাজ করতো টেথিস সাগর। মধ্যযুগীয় মহাযুগের শেষদিকে গগুোয়ানাল্যান্ড ফাটল ধরে এবং উল্লেখিত অংশসমূহ একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন দিক বাসতে বাসতে আজকের অবস্থানে এসে দাঁড়ায়। প্রমাণিত হয়েছে যে ভারত উপমহাদেশ এমনিভাবে গত ১০ কোটি বছর ৩০০০ মাইলের বেশি পথ অতিক্রম করে এশিয়া ভূখন্ডের সাথে ধাক্কা খেয়েছে। এই ধাক্কার ফলে উক্ত ভূখগুদ্বয়ের মাঝে জমাকৃত পলল এবং পাললিক শিলা সংকুচিত হয়ে হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টি হয়েছে। হিমালয় পাদভূমিতে গহীন অরণ্যভূমি, সিদ্ধ গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা আবার শ্যামল শস্যভূমি। নদ-নদী গিরিকান্তার সমুদ্র মরুভূমির সমস্ত প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর এই জনপদ। কেবল প্রকৃতিক ও ভৌগোলিক বৈচিত্র্য নয়।,জনগোষ্ঠী ও তাদের জীবনচরণে ও বৈচিত্র্যের অন্ত নেই। প্রস্তর যুগের ভারত শ্রেণীর মানুষের ব্যবহৃত বহু প্রস্তর নির্মিত হাতিয়ার আবিষ্কৃত হয়েছে হিমালয় পাদদেশের এই জনবসতিতে।

আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে এই শ্রেণীর লোকেরা বংশধরগণ আজও কিছু পরিমানে আছে। নব্যপ্রস্তর  যুগে যারা এই ভারত ভূমিতে বাস করতো তাদের সাথে অষ্টেলিয়ার আদিম অধিবাসীদের সদৃশ্য আছে বলে তাদেরকে "আদি অস্টেলিয়" শ্রেণীর লোক বলা হয়। হো, মুগুা, সাঁওতাল, কোল প্রভৃতি উপজাতির লোকেরা এখনোও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করে।

সিন্ধু সভ্যতা

প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজের ফলে ভারতবর্ষে বৈদিক সভ্যতার পূর্বে যে এক সুপ্রাচীন নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং এই সভ্যতা পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার সমকালীন। খ্রিষ্ট জন্মের প্রায় ৩০০০ হাজার পূর্বে মিশর ও মেসোপোটোমিয়া সভ্যতার সমকালীন সময়ে সিন্ধু উপত্যকায় এক উচ্চ নগর সভ্যতার উদ্ভব ঘটে। এ সভ্যতা স্থিতিকাল খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৫০ হতে ২৭৫০ অব্দ অবধি বিরাজমান ছিলো।

এই সিন্ধু সভ্যতার আবিষ্কার যেমন আকস্মিক, তেমনি রোমাঞ্চকর। প্রখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক বাঙালি রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায় কোন এ গ্রন্থি  পাঠ করেন যে আলেকজান্ডার প্রত্যাবর্তনের কালে ১২ টি শিলামঞ্চ স্থাপন করে তাতে ভারতীয় ও গ্রীক ভাষায় বিজয় কীর্তি লিখে রেখে যান। এই শিলামঞ্চগুলো আবিষ্কারের উদ্দেশ্য ঘুরতে ঘুরতে সিন্ধু প্রদেশের লারকানায় কয়েকটি ধ্বংস্তুপ দেখতে পান। স্যার জন মার্শালের সহায়তায় ১৯২২ থেকে ১৯৩১ অবধি খনন কার্য পরিচালনা করে যে শহরের আবিষ্কার করেন তারই নাম মহেনজোদারো বা মৃতের ভূমি। পাঞ্জাবের মন্টগোমারী জেলার হরপ্পায়  ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার আরও রহস্যজনক ১৮৫৬ খ্রী করাচি হতে লাহোর অবধি রেললাইন পাতার ভার পড়ে ব্রান্টন ভ্রাতৃদ্বয়ের উপর। রেললাইন পাতার জন্য ইট ও পাথরের কুচির প্রয়োজন হলে তারা ব্রামহ্মণাবাদ ও সুলতান নামক দুটি শহর হতে ইট সংগ্রহ করতে গিয়ে কয়েকটি শীলমোহর আবিষ্কার করেন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে দয়ারাম সাহজীর নেতৃত্বে হরপ্পার খননকার্য শুরু হয় এবং এক ঐতিহাসিক সভ্যতার উন্মোচত ঘটে। বর্তমান লাহোর থেকে প্রায় ১০০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে ইরাবতী নদীর ধারে এই হরপ্পা। সিন্ধু নদ ও তার নিকটবর্তী অঞ্চলে যে সভ্যতা নির্দেশনা পাওয়া গিয়েছিল তাকেই বলা হয় 'সিন্ধু সভ্যতা'।পশ্চিম বেলুচিস্তানের মোগ নদী হতে আরম্ভ করে পূর্বদিকে সিন্ধু নদ পর্যন্ত এক বিস্তৃর অঞ্চল জুড়ে এই সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। হরপ্পা হইতে মাহেনজোদারোর দূরত্ব প্রায় ৩৫০ মাইল। তবে এই দুটি শহর একই প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং সম্ভবতঃ জনপদে যোগাযোগ ছিল। তবে এখনে মিশরের মত রাজতন্ত্র অথবা সুমেরের মত পুরোহিত তন্ত্র ছিল কিনা বলা কঠিন। বর্তমান সিন্ধু অববাহিকা অঞ্চল শুষ্ক ও বৃষ্টি বিরল হলেও একদিনে এই অঞ্চল মৌসুমী বায়ু বাহিত বৃষ্টিবহুল অঞ্চল ছিল। বন্যার ফলে এই পরিকল্পিত শহর আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ বছর পূর্বে পরিত্যক্ত বা ধ্বংস হয়েছে। অথবা মৌসুমী বায়ু তার গতি পরিবর্তন করায় শস্য সমৃদ্ধ সিন্ধুতট উষর মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। আবার কারো মতে বহিরাগতদের আক্রমণের কালেই এই সভ্যতার ধ্বংস হয়। এই বহিরাগতরা ছিলেন বৈদিক আর্য। মহেজোদারোর পথে-ঘাটে নরনারীর কংকাল যেভাবে একত্রিত হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়, তাতে মনে হয় এরা আকস্মিকভাবে আক্রান্ত হয় নিহত হয়েছিল। অনেকের মাথার খুলিতে অস্ত্রের আঘাতও পাওয়া যায়। আর্যদেবতা দেবরাজ ইন্দ্রের অপর নাম পুরন্দর অর্থাৎ পুর বা নগর ধ্বংসকারী। এর সঙ্গে কিছু সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। সিন্ধু সভ্যতার যুগে মানুষের ধর্মীয় জীবনে প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধকে লক্ষ্য করা যায় গভীরভাবে। শীলমোহরে অংকিত ষাঁড়ের মূর্তি ও পশুপতির মূর্তি এদের গভীরতম ধর্মজীবনের পরিচয় দেয়। এখানে পশু পরিবৃত যোগাসনে উপবিষ্ট ত্রিশিব দেব মূর্তি পাওয়া গিয়েছে, তাই পশুপতি শিবমূর্তি। এছাড়া ধরিত্রী দেবীর পূজা প্রচলিত ছিল। বৃক্ষ, সর্প, শীলমোহরে স্বস্তিকা ও চক্রচিহ্নসহ সূর্য পূজা প্রচলিত ছিল। এখানকার সমাধিক্ষেত্র সমূহের পর্যালোচনা করে ধারণা করা যায় যে, মিশরীয়দের অনুরূপ এখানকার আদিবাসীরা মৃত্যুর পরেও এক ধরণের জীবনের অস্তিত্বে বিশ্বাসী ছিল। তন্ত্র মন্ত্র বিশ্বাস সেই প্রাক আর্য যুগের বিশ্বাসের ফলশ্রুতি। সিন্ধু উপকূলে এ দ্রাবিড়গণই অপদেবতার পূজা করতো। আর্যগণ পরবর্তীকালে সংস্কারের মাধ্যমে এই  পূর্বাচারের প্রচলন অব্যাহত রাখে এবং মহাকাব্য ও লোকগাথায় স্থান লাভ করে।

আর্য সভ্যতা


সিন্ধু সভ্যতার পরে যে সভ্যতার পরিচয় পাওয়া যায় তা হলো আর্য সভ্যতা। গ্রীক ও ল্যাটিন ভাষার সাথে সংস্কৃত ভাষার সাদৃশ্য আছে বলে ধারণা করা হয়। রাশিয়া দক্ষিণা অংশে ত কাষ্পিয়ান সাগরের তীরবর্তী অঞ্চল আর্যগণের আদি বাসভূমি ছিল। বংশবৃদ্ধি, খাদ্যাভাব, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা আনুমান বহির্ভূত কোন অজ্ঞাত কারণে আর্যগন তাদের আদি বাসভূমি ত্যাগ করে দুই শাখা অগ্রসর হয়। একটি ইউরোপের দি়কে, অপরটি ভারত ইরানের দিকে এগিয়ে চলে। তারা খ্রিস্ট জন্মের ২০০০ বছর পূর্বে হিন্দুকুশ পর্ব্বত অতিক্রম করে ভারতবর্ষে প্রবেশ করে। অবশ্য আর্যগণ একসাথে নয়, বিভিন্ন গোত্রপাতি ও গোষ্ঠীপতির অধীনে ভারতে বাস করতে থাকে। আর্যগণ যখন ভারত আগমন করে তখন এই দেশে কতগুলো বিচ্ছিন্ন জনপদে বিভক্ত ছিল এবং তাতে কৃষ্ণবর্ণ অনার্যগণ বসবাস করত। অনার্যগণ সহজেই আর্যগণকে স্বীকার করে নেকরতে নাই, প্রাণপন লড়াই করেছে। বৈষয়িক ব্যাপারে অনার্যগন আর্যদের উপর বিদ্বিষ্ট ছিলেন তাই নয়, তাদের আধ্যাত্মিক ক্রিয়াকলাপও সুনজরে দেখত না। সুযোগ পেলেই যজ্ঞাদি ভণ্ডুল করে দিত। বহু দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষের পর কিছু অনার্য বশ্যতা স্বীকার করে এবং আর্য সমাজে আশ্রয় লাভ করে।

আচার্য অনার্যগণকে পরাজিত করে রাজ্য বিস্তার করার সাথে তাদের ধর্ম ও সভ্যতাকে প্রসারিত করে। ঋগ্বেদে আফগানিস্তানের কুভা (কাবুল) নদী, ভারতের সিন্ধু নদ ও তার ওপনদীসমূহ এবং সরস্বতী নদীর উল্লেখ্য আছে। ব্রাহ্মণ রচনা প্রাক্ কালে পূর্বাঞ্চলের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মনুসংহিতার যুগে উত্তরে হিমালয় হতে দক্ষিণে বিন্ধ্য পর্বত পর্যন্ত, আর পূর্বে বঙ্গোপসাগর হতে পশ্চিমে আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তর অঞ্চলটি "আরাজ্য" নামে অভিহিত হয়। বৈদিক যুগের শেষভাগে আর্যরা বিন্ধ্য পর্বত অতিক্রম করে দক্ষিণ পথের দিকে প্রসারিত হয়। রামায়ণের রাজা রামচন্দ্রের বিজয় অভিযান আর্যজাতির অগ্রগতির পরিচয় বহন করে। বহু সংঘর্ষ ও বহু শতাব্দীর প্রয়াসের ফলে দক্ষিণাত্যে বিদর্ভ, চেদী, দন্তক, মুলক অঞ্চলে আর্য বসতি স্থাপিত হয়।

এইসব অগ্রযাত্রার ফলে আর্য ও অনার্য  সংস্কৃতির মিলনে এক সমন্বয় সাংস্কৃতি সমগ্র ভারতবর্ষে গড়ে উঠে। যাগযজ্ঞের পাশাপাশি শুরু হলো পূজা অর্চনা, ধ্যানের পাশাপাশি মূর্তিপূজা ও বলিদান। এই মিশ্র চিন্তাধারা রূপ লাভ করে এক আধ্যাত্মিক ঐক্যে যা বর্তমানে হিন্দু ধর্মাবমম্বীদের মধ্যে বিরাজমান।

বাংলাদেশের সভ্যতা

বাংলাদেশের প্রাচীন মানবের ইতিহাস সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করা প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়। প্রস্তর যুগে এই ভূমিতে মানুষের বসবাস ছিল, এমনকি বরফের যুগের মানুষ বসবাস করতো। আদিম মানুষদের "প্রাচীন অস্ট্রেলিয়ান" বা "ভেদ্দিতঃ" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার পাহাড়ি মানুষ এবং আন্দামানের আদি মানুষের সাথে এর সংযোগ ব্যাপক। এই ভেদ্দিত শ্রেণীর লোকদেরকে দেখা যায় মহেনজোদারোতে এবং দক্ষিণে দ্রাবিড় অঞ্চলে। অপর এক রক্তের স্রোতে  মঙ্গোলীয়ানদের সংমিশ্রণ। যদিও "ভেদ্দিত" বাঙালিদের মূল উৎস, তবে কালক্রমে ইন্দো-আর্য, শক মঙ্গোলীয়াব, মালয়ান এবং ইন্দোনেশিয়ানদের সাথে এর সংমিশ্রণ ঘটে। এদের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠে এক মানব গোষ্ঠী যার মাথা সম্পূর্ণ গোল নয়, লম্বা নয়, শরীর খুব লম্বা বা বেটেও নয়, এরূপ এক নতুন ধরণের মানুষ, নাম বাঙালি জাতি। 

মালব, খাস, হুন, কুলিক, কারনাট, কাম্বোজ, খর, দেবল প্রভৃতি জাতি বাইরে থেকে বাংলাকে আক্রমণ করেছিল বারংবার। কেউবা স্থায়ীভাবে বসবাস করে রক্তস্রোতে মিশ্রিত হয়েছে। আবার এই বাংলা অনেকেই শাসন করেছে। সপ্তম শতাব্দীতে খরানা রাজবংশ বাংশানুক্রমে সমতটে রাজত্ব করেছিল। কম্বোজ রাজবংশ দশম শতাব্দীতে গৌড়ে রাজত্ব করেন। ব্রাহ্মণ বংশ ১১-১২ শতাব্দীতে শাসন করেন এবং সেন বংশ কর্ণাটক থেকে এসে প্রায় ২০০ বছর বাংলাদেশ শাসন করে। হাবসী সুলতানগণ বাংলাদেশের রাজত্ব করেন এবং আরবীরা বাণিজ্য উপলক্ষে এসে অনেকেই নোয়াখালী, চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। 'মগ' জলদস্যুগণ ১৬/১৭ শতাব্দীতে এই অঞ্চলে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে এবং অনেকেই বাংলায় স্থায়ী হয়ে যায়। এভাবে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অনেক বিপর্যয়ের মাঝেই এই বাংলাদেশ তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশী সভ্যতা বিকাশ ঘটে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা তাতে নতুন মাত্রা যোগ করে।
#ভুল হলে ক্ষমা করবে,ঈশ্বর সবার মঙ্গল করুক, হিন্দু ধর্মের জয় হোক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিষ্ণু দশ অবতারের পরিচয়

বেদের চনৎকার কিছু শ্লোক।

হিন্দুদের দৈনিক প্রার্থনার মন্ত্র